২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্ধারিত কোটা বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে প্রতি শ্রেণিতে একজন করে অতিরিক্ত আসন সংরক্ষণের নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নতুন আদেশ কেবল ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য হবে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়। নতুন আদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত প্রতি শ্রেণিতে একজন করে ভর্তির সুযোগ সংরক্ষিত থাকবে। তবে এই আসনে ভর্তির জন্য লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ শতাংশ কোটার পাশাপাশি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আলাদা কোটা সংরক্ষণের আদেশ জারি করেছিল। কিন্তু সোমবার (২ মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেই আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মন্ত্রণালয় নতুন সিদ্ধান্ত নেয়।
নতুন আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র বা গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শনও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যুকৃত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের গেজেট যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, যদি আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না যায়, তাহলে মেধা তালিকা থেকে ওই আসনে ভর্তি করা হবে। কোনো অবস্থাতেই আসন শূন্য রাখা যাবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ আহত ও শহীদ হয়েছিলেন। তাদের পরিবারের সদস্যদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে আগের আদেশে যেখানে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছিল, সেখানে নতুন আদেশে তা বাতিল করে প্রতি শ্রেণিতে একজন করে অতিরিক্ত আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই নতুন আদেশ কেবল ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগের আদেশে কোটা সংরক্ষণের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হলে তা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারত। নতুন সিদ্ধান্তে প্রতি শ্রেণিতে একজন করে অতিরিক্ত আসন সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে।
তবে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য এই সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: এফএনএস