কেমন আছো? গতকাল রাত ১২টায় আমি আর সোহিনী কেক কেটেছি তোমার জন্য। প্রতিবার যেমন হয় তেমনই। আজ সকাল থেকেই তোড়জোড়। দুপুরে ভাতের সঙ্গে ইলিশ বেগুনের ঝোল, চিংড়ি, দই মাছ, মাংস, মুড়োর ডাল— সব নিজে হাতে রেঁধেছি। তুমি তো আমার হাতে ওই রান্নাগুলোই বার বার খেতে চাইতে। আর দোলন, তোমার মেয়ে আজ তার ‘বেস্ট বাবা’-র জন্য চাটনি রান্না করেছে।
হয়েছে আয়োজন, শুধু ‘সে’ নেই আজ নিশ্চয় ভাবছ, তোমার সঙ্গে কথা বলতে বলতে তোমার প্রিয় দইয়ের লিস্টটা আমি এ বার বোধ হয় ভুলে গিয়েছি! নাহ, তাপস, আজ পয়োধি আনা হয়েছে। সরের দই এসেছে। বাড়িতে আটার পায়েস হয়েছে।তোমার জন্মদিনে সোহিনীর বন্ধুরা মজা করছে সারা বাড়ি জুড়ে। তুমি যদি আমার সামনে এসে দাঁড়াতে…
আমার একটা অভিযোগ আছে। তোমার দিক থেকে আজকাল কম চিঠি পাচ্ছি! কেন? তুমি তো জানো, আমরা আমাদের সব কথা চিঠিতে লিখতাম। এ কি আজকের অভ্যেস নাকি? সেই কবে থেকে চলছে। যা সামনে বলতে পারতাম না, চিঠিতে বলতাম। আমি কিন্তু আমার একাকিত্ব, মন খারাপ, ভাল লাগা সব জানাচ্ছি তোমায়। চিঠিটা চলুক তাপস আমাদের মধ্যে। ওখানে আমার নিজের সমস্ত আবেগ বলে রাখি। হাল্কা হই। আমি জানি, এক দিন ঠিক উত্তর আসবে।
স্মৃতির পাতায় ডুব: নন্দিনী-তাপস
জানো তাপস, আমার যা যা কাজ করে যেতেই হবে বলে মনে হয় তা খুব দ্রুত সারছি আজকাল। সব দায়িত্ব তাড়াতাড়ি মিটিয়ে এই অধ্যায় শেষ করে দিতে চাই। আসলে মেয়ে আটকে রেখেছে আমায়। আমাদের মেয়ে! ওর জন্য বেঁচে আছি তাপস। হয়তো স্বার্থপর ভাবছো আমায়, ভাব! তবুও বলব, এই অধ্যায় শেষ করতে চাই। তুমি তো জানো, আমি তোমায় ছাড়া কোনও দিন জীবন কাটাইনি। জানিই না কী করে একলা বাঁচতে হয়!
আজ তোমার জন্মদিনে সব হল তাপস! তুমি শুধু থাকলে না।আমাদের মধ্যেই আছো অথচ তোমায় ছুঁয়ে দেখতে পারি না আর।
এ কেমন জন্মদিন তাপস?