1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুমোদন, প্রকাশ হতে পারে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক মিশনে আওয়ামীদের হামলা, ব্যবস্থা নিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠি জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবলে ঈশ্বরদী চ্যাম্পিয়ন আসন বিন্যাস চায় পাবনা, আগের আসন পুনর্বহাল চায় সিরাজগঞ্জবাসী আবু সাঈদ হত্যার বিচার শুরু, ট্রাইবুনালে অশ্রুসিক্ত বাবা চাটমোহরে বিষধর সাপের কামড়ে কৃষকের মৃত্যু ফজলুর রহমানের দলীয় পদ স্থগিত করল বিএনপি চাটমোহরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান: নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে জরিমানা ডাকসু নির্বাচনে প্রচার শুরু, কড়া নজরদারিতে আচরণবিধি কারাগারের নতুন নাম ‘কারেকশন সার্ভিস বাংলাদেশ’, হচ্ছে ব্যাপক সংস্কার

তিন শিশু সন্তান নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন শহিদ মাসুদের স্ত্রী

ডিডিএন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১১৪ সময় দর্শন

ক্ষুদ্র নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদের অকাল মৃত্যুতে তার স্ত্রী হেনা বেগম তিন নাবালক সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিন শিশু সন্তান নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন শহিদ মাসুদের স্ত্রী।

গত ১৯ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে মোঃ মাসুদ (৪২) যাত্রাবাড়ির রায়েরবাগ এলাকার মেরাজনগর বি-ব্লকের শাহী মসজিদ সংলগ্ন সড়কে আছরের নামাজ পড়তে যান। পথে তার দুই পুত্রের সামনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের হেলমেট বাহিনী গুলি করে মাসুদকে হত্যা করে।

তাদের তিন পুত্রের মধ্যে মাহফুজ (১১) চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মারুফ (৬) এবং নার্সারির ছাত্র মাশরাফিকে নিয়ে দুঃসহ স্মৃতি ও  অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে মাসুদের পরিবার।

সম্প্রতি রায়েরবাগের মেরাজনগর এলাকায় বাসস-এর সাথে আলাপকালে সীমাহীন যন্ত্রণার কথা জানাতে গিয়ে মাসুদের স্ত্রী হেনা বেগম (৩৭) কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, ‘হেলমেট বাহিনী আমার দুই ছেলের সামনে আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার ছেলেরা এখনও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে।’

মায়ের মুখে বাবার স্মৃতিচারণ শুনে বাচ্চারা কাঁদতে শুরু করে। আবেগাপ্লুত হেনা বেগম বলেন, ‘বাচ্চাদের বাবার অবর্তমানে তিন সন্তানকে লালন-পালন করা একজন মায়ের জন্য কতটা যন্ত্রণার আমি আপনাকে কীভাবে তা বুঝাবো? আমি কীভাবে তাদের বাবাকে ফিরিয়ে দেবো?’

একটি বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, হেলমেট পরা দুই যুবক একটি দোকানের সামনে থেকে নির্বিচারে গুলি ছুঁড়ছে এবং অন্য কয়েকজন তাদের নির্দেশ দিচ্ছে। এসময় একটি গুলি মাসুদের মাথায় ঢুকে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেন, ওই দিনই এই ‘হেলমেট বাহিনী’ মাসুদকে গুলি করার আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে বারান্দায় যাওয়া চার বছর বয়সী আবদুল আহাদকে হত্যা করে। ওই এলাকার বিভিন্ন আবাসিক ভবনের দেয়ালে এখনও নির্বিচারে গুলি চালানোর সেই চিহ্ন রয়েছে।

হেনা বেগমের আহাজারিতে আশেপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছিলো। তিনি বিলাপ করে বলেন, ‘আমার স্বামী একজন নিরাপরাধ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কোনো দলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। তিনি শুধু আসরের নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। তাহলে তার কী দোষ? কেন তাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো?’

শহিদ মাসুদের ভাইয়ের স্ত্রী উম্মে কুলসুম জানান, মাসুদের আহত হওয়ার খবর পেয়ে তারা তাকে উদ্ধার করতে গেলে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী তাদের বাধা দেয়।

তিনি বলেন, ‘তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ তুলেছিলাম এবং বলেছিলাম যে আপনাদের এতো সাহস হল কিভাবে? একজনকে হত্যা করার পর আপনারা তার লাশও নিতে দিচ্ছেন না! আপনারা যদি সরে না যান, তাহলে আমরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করবো।’

তিনি বলেন, আমাদের চিৎকারে আওয়ামী গুণ্ডারা পিছিয়ে গেলে আমরা মাসুদের লাশ উদ্ধার করি।

কুলসুম বলেন, ‘পরে আমরা মাসুদকে যাত্রাবাড়ীর ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থকে মুমূর্ষূ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ওই রাত দেড়টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’

হাসপাতাল থেকে লাশ নিতে কদমতলী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে পুলিশি হয়রানির অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের সাহায্য করেনি। বরং তারা আমাদের বকাঝকা করে এবং থানা থেকে বের না হলে গুলি করার হুমকি দেয়।’

পরে তারা শাহবাগ থানায় জিডি এবং ময়নাতদন্ত শেষে ২১ জুলাই লাশ গ্রহণ করেন।

মাসুদকে দাফন করতে মাতুয়াইল কবরস্থানে গেলেও তার পরিবার হয়রানির শিকার হয়। কুলসুম বলেন, আমরা যখন লাশ কবরস্থানে নিয়ে যাই তখন আওয়ামী লীগের কিছু গুণ্ডা আমাদের বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র দেখাতে বলে হয়রানি করে।

চার সদস্যের সংসার চালানোর দুর্বহ কষ্টের কথা জানিয়ে মাসুদের স্ত্রী হেনা বলেন, ‘আর্থিকভাবে সহায়তা করার কেউ না থাকায় আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিন ছেলেকে নিয়ে আমি খুবই অর্থকষ্টে দিন পার করছি।’

হেনা জানান, তার বাবা পাঁচ বছর আগে মারা গেছেন। ২১ বছর আগে শ্বশুর-শাশুড়িও মারা গেছেন। আর তার মা বেঁচে থাকলেও মেয়েকে সহযোগিতা করার সামর্থ্য তার নেই। দুই ভাই ও দুই বোনসহ তার আরও চার ভাই-বোন থাকলেও কারো আর্থিক অবস্থাই তাকে সহযোগিতা করার মতো ভালো নয়।

এদিকে শহিদ মাসুদ তার চার ভাইয়ের মধ্যে চতুর্থ। এলাকায় তার বাবার জমিতে একটি টিনশেড বাড়িতে তার নিজের পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ব্যবসার উপার্জন দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

সরেজমিন দেখা যায়, মাসুদের স্ত্রী তার তিন সন্তান নিয়ে রান্নাঘর ও বাথরুম সংযুক্ত একটি কক্ষে বসবাস করছেন। উপরে কংক্রিটের ছাদ।

দুঃখ দিনের স্মৃতিচারণ করে হেনা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা আগে যে বাড়িতে থাকতাম তাতে বৃষ্টির পানি পড়ত। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর স্থানীয় লোকজন এই ঘরটি তৈরিতে আর্থিক সহায়তা করেছে।’

তিনি বলেন, আমার এমন কোনো আয়ের উৎস নেই যা দিয়ে আমি বাচ্চাদের খাবার জুটাবো। তারা চোখের সামনে তাদের বাবার মৃত্যুটা দেখে এতোটাই মানসিক আঘাত পেয়েছে যে, এই ছোট ছোট বাচ্চাদের বাড়িতে রেখে কোন কাজেও যেতে পারছি না।’

তাদের অবস্থা এতোটাই খারাপ যে কোনভাবে তাদের এক বেলার খাবার জোটালে আরেক বেলার খাবার থাকে না।  স্বামীহারা বিভ্রান্ত হেনা তার তিন ছেলের লেখাপড়াসহ তার পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান।

তিনি বলেন,  ‘আমার স্বামীর মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবার নয়। তবে সরকার যদি আমার সন্তানদের শিক্ষার খরচ বহনসহ আমার পরিবারের দায়িত্ব নেয় তাহলে এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলবে।’

মাসুদের স্ত্রী তার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে বলেন, ‘যারা মানুষ হত্যার নির্দেশ দিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

বাসস

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host