1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

‘‘তুমি এসেছিলে বলে হেসেছিল স্বাধীনতা, হেসেছিল বাংলা’’ দেশরত্ন শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে-ড. নাহিদ হুসেইন

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪
  • ২৯৪ সময় দর্শন

‘তুমি এসেছিলে বলে হেসেছিল স্বাধীনতা, হেসেছিল বাংলা’- ড. নাহিদ হুসেইন

কবি আসাদ মান্নান বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে ‘চাই তাঁর দীর্ঘ আয়ু’ কবিতায় লিখেছেন- ‘মৃত্যুকে উপেক্ষা করে মহান পিতার স্বপ্নবুকে/ নিরন্তর যিনি আজ এ জাতির মুক্তির দিশারি/ ঘূর্ণিঝড়ে হালভাঙা নৌকাখানি শক্ত হাতে বৈঠা ধরে টেনে/ অসীম মমতা দিয়ে পৌঁছুচ্ছেন আমাদের স্বপ্নের মঞ্জিলে….’

আর আমি বলতে চাই, ‘তুমি না ফিরে এলে বাংলার স্বাধীনতা আত্মহননের পথে ডুকরে ডুকরে কাঁদতো, তুমি না ফিরে এলে বাংলার স্বধীনতার সূর্যটা ঝলসে গিয়ে ডুবে যেত চিরতরে সমুদ্র গহবরে। তুমি এসেছিলে বলে হেসেছিল স্বাধীনতা, হেসেছিল বাংলা।’


কবি আসাদ মান্নানের মতে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী, তিনি মুক্তির দিশারি, মৃত্যুকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছেন নির্ভীকভাবে, আর গভীর মমতা দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট। কবির এই কথাগুলো সত্য হতো না, যদি না ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা নিজ দেশে ফিরে আসতেন। আসলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাস, তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এদেশের শাসনকার্যে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় আসীন থেকে মহিমান্বিত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে মহাকালকে স্পর্শ করতে সক্ষম। এর কারণ আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে। —

তিনি লিখেছেন ‘আমাদের অধিকাংশেরই সুখ-দুঃখের পরিধি সীমাবদ্ধ; আমাদের জীবনের তরঙ্গক্ষোভ কয়েকজন আত্মীয় বন্ধু-বান্ধবের মধ্যেই অবসান হয়।…কিন্তু পৃথিবীতে অল্পসংখ্যক লোকের অভ্যুদয় হয় যাঁহাদের সুখ-দুঃখ জগতের বৃহৎ ব্যাপারের সহিত বদ্ধ। রাজ্যের উত্থান-পতন, মহাকালের সুদূর কার্যপরম্পরা যে সমুদ্রগর্জনের সহিত উঠিতেছে পড়িতেছে, সেই মহান কলসংগীতের সুরে তাঁহাদের ব্যক্তিগত বিরাগ-অনুরাগ বাজিয়া উঠিতে থাকে। তাঁহাদের কাহিনী যখন গীত হইতে থাকে তখন রুদ্রবীণার একটা তারে মূলরাগিণী বাজে এবং বাদকের অবশিষ্ট চার আঙুল পশ্চাতের সরু মোটা সমস্ত তারগুলিতে অবিশ্রাম একটা বিচিত্র গম্ভীর, একটা সুদূরবিস্তৃত ঝংকার জাগ্রত করিয়া রাখে।’

অর্থাৎ শেখ হাসিনার ‘সুখ-দুঃখ জগতের বৃহৎ ব্যাপারের সঙ্গে বদ্ধ’। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা। অন্যদিকে বিশ্বকবির ভাবনাসূত্রে বলা যায়, শেখ হাসিনাকে কেবল ব্যক্তি বিশেষ বলে নয়, বরং মহাকালের অঙ্গস্বরূপ দেখতে হলে, দূরে দাঁড়াতে হয়, অতীতের মধ্যে তাঁকে স্থাপন করতে হয়, তিনি যে সুবৃহৎ রাজনৈতিক অঙ্গনে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসেবে আছেন সেটাসুদ্ধ তাঁকে এক করে দেখতে হয়। এদিক থেকে তিনি ‘ইতিহাসস্রষ্টা মহান ব্যক্তিত্ব’। বর্তমানকালে তাঁর কৃতিত্ব মূল্যায়ন করতে হলে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সঙ্গে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সংগ্রামকে একীভূত করে দেখতে হবে।

১৭ মে কে আমরা সাধারণত বলে থাকি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন দিবস। কিন্তু আমি বলবো এটার সঠিক নাম হবে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম দিবস। কেননা আমরা ১৯৭১ সালে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নৃশংস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন করেছিলাম আমাদের প্রিয় স্বদেশ বাংলাদেশ। আমরা গণতন্ত্রকে পেয়েছিলাম। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা এবং যারা সেদিন পাকিস্তানকে রক্ষা করতে চেয়েছে মূলত তারাই সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, সাথে সাথে হত্যা করে গণতন্ত্রকে, হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে। সুতরাং একই সাথে তারা অনেকগুলি কাজ করেছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনরকম টিকে ছিল। তবুও যারা সেদিন অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা দলকে এক রাখতে সক্ষম হচ্ছিল না। এমতাবস্থায় তারা খুব অল্প বয়সে আওয়ামী লীগের মত বড় একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে নেত্রী শেখ হাসিনাকে দলীয় প্রধান করা হয়। দলীয় প্রধান করার সাথে সাথে তিনি কিছুতেই বিদেশে না থেকে দেশে ফিরে আসার উদ্যোগ নেন। কিন্তু তখনকার জিয়াউর রহমানের রাজত্বকালে নেত্রীকে দেশে ফিরে আসতে অনেক বাধা সৃষ্টি করা হয়। বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি, এমনকি বিভিন্ন রকমের গুজব ছড়ানো হচ্ছিল যে — শেখ হাসিনা দেশের মাটিতে পা দেওয়াার সাথে সাথে তাকে গুলি করে হত্যা করা হবে। কিন্তু এতোকিছুর মধ্যেও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলেন।

১৯৮১ থেকে ১৯৮৮ এই ৭ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় শেখ হাসিনা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছের মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। অথচ ১৭ মে তাঁর দেশে ফেরা ছিল অতি সাধারণ, কারণ সেভাবেই তিনি দেশের জনগণের সামনে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। সেদিন তিনি এক বৃহৎ শূন্যতার মাঝে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এদেশে তাঁর ঘর নেই; ঘরের আপনজনও কেউ নেই। তাই সারা দেশের মানুষ তাঁর আপন হয়ে উঠল। তিনি ফিরে আসার আগে ছয় বছর স্বৈর-শাসকরা বোঝাতে চেয়েছিল তারাই জনগণের মুক্তিদাতা। কিন্তু সাধারণ মানুষ ক্ষণে ক্ষণে জেগে উঠছিল, বিচার দাবি করছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের। সেনা শাসকের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকায় জনগণের শাসনের দাবি নিয়ে রাজনীতির মাঠে রাতদিনের এক অক্লান্ত কর্মী হয়ে উঠেছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি নেতা কিন্তু তারও বেশি তিনি কর্মী। কারণ দলকে ঐক্যবদ্ধ করা, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর শাসনকাল সম্পর্কে অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দেওয়া, পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা তাঁর প্রাত্যহিক কর্মে পরিণত হলো।

দেশে ফেরার প্রতিক্রিয়ায় আবেগসিক্ত বর্ণনা আছে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নিজের লেখা গ্রন্থগুলোতে। কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছেন, শেখ হাসিনা যখনই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সিঁড়িতে পা রেখেছিলেন তখনই বুঝে নিয়েছিলেন ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরুর পথ।’ তাঁর ‘পথে পথে গ্রেনেড ছড়ানো’। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের (১৯৮১ সালের ১৭ মে) আগে ৫ মে বিশ্বখ্যাত নিউজউইক পত্রিকায় বক্স আইটেমে তাঁর সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, জীবনের ঝুঁকি আছে এটা জেনেও তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। ১৯৮৩ সালের ২৪ মার্চের সামরিক শাসন জারির দুইদিন পর স্বাধীনতা দিবসে একমাত্র শেখ হাসিনাই সাভার স্মৃতিসৌধে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমি সামরিক শাসন মানি না, মানবো না।

বাংলাদেশে সংসদীয় ধারার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবোই করবো।’ তাই তো কবি ত্রিদিব দস্তিদার শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘আপনিই তো বাংলাদেশ’। লেখক : একজন রাজনীতিক ও শিক্ষাবিদ

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host