বিশ্বকাপের আগে কিছুতেই স্বস্তিতে নেই সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। মাঠ ও মাঠের বাইরে দুজায়গাতেই ব্যর্থ সি আর সেভেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরার পর থেকে যেন হারিয়ে ফেলেছেন নিজেকে! দলটির কোচ এরিক টেন হাগ পর্তুগাল অধিনায়ককে বেশিরভাগ ম্যাচেই একাদশের বাইরে রাখেন। বিষয়টি নিয়ে মাঝেমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। অবশেষে আর সইতে না পেরে উগড়ে দিয়েছেন চূড়ান্ত ক্ষোভ। বিশ্বকাপ মিশন শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে রোনাল্ডো স্পষ্ট করেই বলেছেন, ম্যানইউর কোচ একজন বিশ্বাসঘাতক।
সাক্ষাৎকারে ম্যানইউর বর্তমান কোচ টেন হাগ ও সাবেক কোচ রালফ রাংনিকেরও কড়া সমালোচনা করে রোনাল্ডো বলেন, ‘আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। আমাকে নিশানা করা হচ্ছে। আমি এই ক্লাবে থাকি সেটা অনেকে চায় না। শুধু এই বছর নয়, আগের বছরও তারা সেটাই চেয়েছিল। শুধু কোচই নয়, কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলার এবং কর্মকর্তা আমাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র করছে। আমি প্রতারিত হয়েছি।’ এক্ষেত্রে টেন হাগের নাম সরাসরি বললেও অন্যদের নাম বলেননি সি আর সেভেন, ‘শুধু কোচ নয়, আরও দুই তিন জন আছে যারা আমাকে চায় না।’
গত অক্টোবরেই প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিরুদ্ধে বদলি হিসেবে রোনাল্ডোকে নামাতে চেয়েছিলেন টেন হাগ। কিন্তু বদলি হিসেবে নামতে রাজি হননি পর্তুগিজ তারকা। ওই সময় টানেল দিয়ে বেরিয়ে যান। এর ফলে টেন হাগ তাকে বহিষ্কার পর্যন্ত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, সবশেষ আগের দুই ম্যাচ অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেননি রোনাল্ডো। এই মৌসুমের শুরু থেকেই ম্যানইউর একাদশে নিয়মিত নন রোনাল্ডো। বেশিরভাগ ম্যাচে বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয়েছে। হাতেগোনা কিছু ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছেন। ডাচ কোচ টেন হাগের যে রোনাল্ডোকে পছন্দ নয়, তা তার দল গঠন থেকেই স্পষ্ট। সি আর সেভেনের চেয়ে মার্কাস রাশফোর্ডের ওপর ভরসা বেশি তার।
এসব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রোনাল্ডো বলেন, ‘যদি তুমি আমাকে সম্মান না করো, তা হলে আমিও তোমাকে সম্মান করব না। আগে ফুটবলারদের সম্মান করো। তা হলে তোমাকেও ফুটবলাররা সম্মান করবে। সত্যি বলছি, এরিক টেন হাগের প্রতি আমার কোনো সম্মান নেই।’ টেন হাগের আগে ম্যানইউর অন্তর্র্বর্তী কোচ ছিলেন রাল্ফ রাংনিক। তাকে কোচ হিসেবেই মানতে চান না রোনাল্ডো। সুদর্শন সুপারস্টার এ বিষয়ে বলেন, ‘যদি তুমি ভালো কোচই না হতে পার তাহলে কীভাবে দলের বস্ হবে? আমি ওর নাম আগে শুনিনি। ম্যানচেস্টারের মতো দলে সে বেমানান।’ ২০ নভেম্বর শুরু হচ্ছে কাতার বিশ্বকাপ। কিন্তু তার আগেই নিজের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে অনাকাক্সিক্ষত বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন রোনাল্ডো। শুধু কোচই নয়, তিনি ক্ষুব্ধ দলের কয়েকজন ফুটবলার ও কর্মকর্তার ওপর। বিষয়টি এখন কতদূর গড়ায় সেটা দেখার আছে। তবে নিশ্চিত করেই বলা যায়, বিশ্বকাপে হয়তো এর বাজে প্রভাব পড়বে পর্তুগাল দলের ওপর।