উল্লাপাড়া প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অসময়ে এবং নিম্নমানের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন উধুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল জলিল ও তার সঙ্গীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান ও তার সঙ্গীদেরকে স্কুলে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে এলাকার কিছু লোক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের তেলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই স্কুলের নৈশপ্রহরী আব্দুল খালেককে আটক করেছে। তবে মো. আবুল জলিল নিম্নমানের শিক্ষা উপকরণ বিতরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তেলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মধুসূধন সরকার জানান, এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় সরকার ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে তেলিপাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ প্রদানের জন্য উধুনিয়া ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর জলিলকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু আব্দুল জলিল এই বরাদ্দের অর্থ থেকে সময় মতো তেলিপাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেননি। বিষয়টি তেলিপাড়া স্কুল কতৃপক্ষ জানতো না। কয়েক দিন আগে এলজিএসপিথর সিরাজগঞ্জ অফিস থেকে তেলিপাড়া স্কুলে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করার ব্যাপারে একটি তদন্ত টিম আসে। তাদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানতে পারেন।
এদিকে এলজিএসপির পক্ষ থেকে তদন্তের খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ওই চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, ইউপি সদস্য গোপেন্দ্রনাথ ও আব্দুল কুদ্দুসকে নিয়ে কিছু স্কুল ব্যাগ কিনে বিতরণের জন্য তেলিপাড়া স্কুলে যান। এ সময় শিক্ষাথীরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্কুল চত্বরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্কুল ব্যাগ গ্রহণ না করার বিষয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ও তার সঙ্গীদেরকে কিছু সময় অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। পরে স্কুলের শিক্ষকগণ চেয়ারম্যানকে ছাত্রদের কাছ থেকে তাকে মুক্ত করেন।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানান, করোনার কারণে স্কুল দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় তিনি সময় মতো ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুল ব্যাগ দিতে পারেননি। গতকাল মঙ্গলবার ওই স্কুলে ব্যাগ বিতরণ করতে গেলে কিছু শিক্ষক কর্মচারীর প্ররোচনায় শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং তাকে ও তার সঙ্গীদেরকে অবরুদ্ধ করে। পরে তেলিপাড়া গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় তিনি মুক্ত হন। এ ঘটনায তিনি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে উল্লাপাড়া মডেল থানায় মামলা করেন।
সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, করোনার কারণে হয়তো ওই চেয়ারম্যান সময় মতো তেলিপাড়া স্কুলে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করতে পারেননি। তবে চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল অবিলম্বে ওই উপকরণ সরবরাহ করবেন বলে তাকে জানিয়েছেন। চেয়ারম্যান কাজ না করলে তাকে বিল প্রদান করা হবে না।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, উধুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে তেলিপাড়া স্কুলের নৈশপ্রহরী আব্দুল খালেককে আটক করে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।