ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বন্যা প্রবন চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কামারশোন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারতলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় কাম-বন্যা আশ্রায়ন কেন্দ্র নির্মানে অতি ধীরগতির কারণে নির্মানাধীন বন্যা আশ্রায়ন কেন্দ্রটি বর্তমানে নির্মান কাজ বন্ধ থাকায় পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে।
বেস ঢালায়ের পর কলাম করা হলেও উর্ধমূখী উন্মুক্ত রড গুলো বৃষ্টিতে ভিজে মরিচিকা ধরায় তার কার্য ক্ষমতা কমে আসছে। আর এমনি ভাবে বর্ষা মৌসুমের আরো ৪-৫ মাস উর্ধমূখী ওই উন্মুক্ত রড গুলো বৃষ্টিতে ভিজে বা পানিতে ডুবে থাকলে স্থাপনাটির সমূহ ক্ষতি হবে বলে ওই এলাকার ইসাহাক আলী, আমির হোসেন সহ একাধীক ব্যাক্তি আশংকা প্রকাশ করেছেন।
এ দিকে চার তলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় কাম-আশ্রায়ন কেন্দ্র নির্মানে নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারনে মের্সাস মীম এন্টারপ্রাইজ নামের ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারের গাফিলতি থাকায় সংশ্লিট বিভাগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এক দফা কারণ দর্শানো পত্র দিয়েছে। আর এতে কাজ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফা কারণ দর্শানো পত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে ঢাকাস্থ দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাজের তদারকী কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২০ সালে সরকার বন্যা প্রবন এলাকায় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় পর্য্যায়) প্রকল্পের আওতায় দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ৩ কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৪ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা প্রবন তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কামারশোন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারতলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় কাম বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে নির্মানের কাজের দরপত্র আহবান করেন।
সে মোতাবেক দরপত্রে অংশ গ্রহন করে জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার মের্সাস মীম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাড়াশের কামারশোন গ্রামে বিদ্যালয় কাম বন্যা আশ্রায়ন কেন্দ্র নির্মান কাজটি পায়। পরে ২০২০ সালের ২৩ আগষ্ট তারা নির্মান কাজ শুরুর কার্যাদেশও পান।
কিন্তু কাজ পাওয়া মের্সাস মীম এন্টারপ্রাইজ নামের ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গাফিলতি করে নিদিষ্ট সময় কাজ শুরু না করে কার্যাদেশ পাওয়ার প্রায় ছয় মাস পর ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারী মাসের শেষ নাগাদ চারতলা বিশিষ্ট বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের স্থানে খোড়াখুড়ি শুরু করেন এবং মার্চের প্রথম সপ্তাহে বেস ও কলাম ঢালাই দেন। এরপর অদ্যবদি আর কোন কাজ না করে ফেলে রাখায় নির্মানাধীন বন্যা আশ্রায়ন কেন্দ্রটি বর্তমানে পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। আর কার্যাদেশ পাওয়ার গত প্রায় এক বছরে কাজের অগ্রগতি বলতে মোট কাজের ১০-১২ শতাংশের বেশী নয়।
তবে এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস মীম এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শামসুল ইসলাম বলেন, বন্যা প্রবন এলাকা হওয়ায় এমনিতেই ৩ থেকে ৪ মাস কাজ করা যায় না। আর আশ্রয়ন কেন্দ্রের নকশা চার বার পরিবর্তন করার কারনে কাজের ধীরগতি। তবে কলামের উর্ধমূখী উন্মুক্ত রড গুলোর কোন ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাজের তদারকী কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজের ধীরগতি। আর এ জন্য ঠিকাদারকে একবার কারণ দর্শানো পত্র দিয়েছি এবং দ্বিতীয় দফা কারণ দর্শানো পত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি উর্ধমূখী ওই উন্মুক্ত রড গুলো বৃষ্টিতে ভিজে যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য পরামর্শ সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।