দেশে দিন দিন করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। গত ১ জুলাই থেকে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও প্রতিদিনই ভাঙছে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড। মঙ্গলবার ( ৬ জুলাই) দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে আর এছাড়া ৫ ও ৬ জুলাই যথাক্রমে ১৬৪ ও ১৬৩ জন মারা গেছেন।
করোনার এই ভয়াল পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও সাত দিন বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু ২১ জুলাই মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হওয়ায় সর্বসাধারণের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সেই সময় লকডাউন শিথিল করা হবে নাকি চলমান থাকবে। যা জানতে সবার মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
এসব নানা প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সব কিছুই নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। মানুষকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে মানুষ যদি বিধিনিষেধ মেনে চলে, তাহলে সামনে সুফল পাওয়া যাবে। এ জন্য আমাদের সবাইকে সরকারি বিধিনিষেধ মানতে হবে।’
এদিকে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২০ বা ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ঈদের তারিখ নির্ধারণে আগামী ১১ জুলাই বসবে চাঁদ দেখা কমিটি। তবে ঈদ ২১ জুলাই ধরে সরকারি ছুটি ২০-২২ জুলাই (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) তিন দিন ধরা আছে। এই হিসাবে সরকারি ছুটি থাকবে পাঁচ দিন। আর সেই ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে কি না, সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে।
গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। এই লকডাউনে অফিস-আদালত, গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার। মাঠে কাজ করছে মোবাইল কোর্ট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে গেলেই জেল বা জরিমানার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের তথ্য মতে, এসব কঠোর পদক্ষেপ দিয়ে ১৪ দিনে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমিয়ে এনে ঈদের সময়টায় সব কিছু শিথিল করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যাতে ব্যবসায়ী, গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা অন্য পেশার মানুষ আনন্দ-উৎসব করতে পারে। এই অবস্থা এক সপ্তাহ বা দশ দিন অব্যাহত রেখে হয়তো আবারও কঠোর বিধি-নিষেধ দেওয়া হতে পারে।