আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর রেলভবনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম,রেলের মহাপরিচালক শামসুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে আগামী ১৬ আগস্ট থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ৩০ আগস্টের মধ্যে ধীরে ধীরে সব আন্তনগর ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর লোকাল ও মেইল ট্রেন চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়, ১৬ আগস্ট থেকে কোন কোন আন্তনগর ট্রেন চালু করা হবে, তার একটি তালিকা করার জন্য রেলের পরিচালন (অপারেশন) বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা চাহিদা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে ট্রেনের নাম তালিকা করবে।
তবে ট্রেন চলাচল বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে কড়াকড়ি অব্যাহত থাকবে। ট্রেনের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই টিকিট বিক্রি করা হবে।
কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট বিক্রি এখনই শুরু হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা বিমানবন্দর, টঙ্গী, জয়দেবপুর ও নরসিংদী স্টেশন বন্ধ আছে। এসব স্টেশন চালু হতেও সময় লাগবে।
এ বিষয়ে রেলের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান জানান, ‘১৬ আগস্ট থেকে আন্তনগর ট্রেন বাড়ানো হবে। ৩০ আগস্টের মধ্যে সব আন্তনগর ট্রেন চালুর পরিকল্পনা আছে। এরপর পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
রেলের পরিচালন বিভাগ সূত্র জানায়, স্বাভাবিক অবস্থায় সারা দেশে ১০০টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এখন বন্ধ থাকা ৬৬টি ট্রেন পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ আগস্টের মধ্যে সব আন্তনগর চালুর কথা বলা হচ্ছে। তবে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাইছে ২৫ আগস্টের মধ্যে সব আন্তনগর ট্রেন চালু করতে। এ ছাড়া বন্ধ স্টেশনগুলো ২৫ আগস্টের পর চালু করে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
রেলের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, কমলাপুর স্টেশন সুরক্ষিত। সেখানে টিকিটবিহীন অযাচিত মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ আছে। কিন্তু বিমানবন্দর, টঙ্গী, জয়দেবপুর ও নরসিংদী স্টেশনে সেই সুযোগ নেই। এ জন্য করোনা পরিস্থিতির পর এসব স্টেশনে অযাচিত মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজ এখনো পুরো শেষ হয়নি। ২০ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৪ মার্চ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নামমাত্র কিছু মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। গত ৩১ মে আট জোড়া আন্তনগর ট্রেন চালু করা হয়। গত ৩ জুন আরও ১১ জোড়া আন্তনগর ট্রেন বাড়ানো হয়। তবে কিছুদিন পর যাত্রীর অভাবে দুই জোড়া ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। এখন মোট ১৭ জোড়া, অর্থাৎ ৩৪টি ট্রেন চলাচল করছে।
ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত দুজন কর্মকর্তা জানান, যাত্রীবাহী ও মালবাহী মিলিয়ে মোট ৩৫৫টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেনই বেশি। লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চালু না করলে যাত্রীসংখ্যা বাড়বে না।