‘চাটমোহরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর দেওয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর পাবনার চাটমোহরের সেই ২৩ হাজার টাকা অবশেষে ফেরত দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান এ এইচ এম কামরুজ্জামান খোকন। গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ভুক্তভোগীদের নিমাইচড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বহরমপুর গ্রামের ভুক্তভোগীদের প্রতিবেশী সাজুর বাড়িতে দলবল নিয়ে তিনি আকষ্মিক হাজির হন। হাজির হয়ে তিনি অভিযোগকারী পরেশ চন্দ্র দাস, জুসনা রাণী , সোনেকা খাতুনকে পৃথকভাবে গ্রাম পুলিশ দিয়ে ডেকে নিয়ে ওই টাকা ফেরত দেন তিনি। এর আগে‘চাটমোহরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর দেওয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ’ শিরোনামে স্থানীয় সহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হলে ওই চেয়ারম্যান নড়েচড়ে বসেন এবং রাতের আধারে তিনি বহরমপুর গ্রামে হাজির হয়ে ভুক্তভুগীদের টাকা ফেরত দেন। তিনি উপজেলার ২ নং নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি।
জানা গেছে,‘চাটমোহরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর দেওয়ার আশ্বাসে অসহায় ব্যক্তির নিকট টাকা আদায়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর ওই ইউপি চেয়ারম্যানের দৃষ্টিগোচর হয় এবং তার নির্বাচনী এলাকাতে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান দ্রুততম সময়ে ভুক্তভুগীর এলাকা বহরমপুর গ্রামের ২১ শে ফেব্রæয়ারি গভার রাতে হাজির হয়ে তাদের প্রতিবেশী সাজুর বাড়িতে দলবল নিয়ে অবস্থান নেন। এসময় গ্রাম পুলিশ দিয়ে ভুক্তভুগী ওই তিনজনকে একে একে ডেকে নিয়ে তাদের পাওনা টাকা ফেরত দেন। এসময় তাদেরকে টাকা দেওয়া বা নেওয়ার বিষয়ে কাউকে কিছু না বলতে নিষেধ করেন। বরং টাকার বিষয়ে কারোর কাছে মুখ খুলতেও সমস্যা হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভুগী বলেন, চেয়ারম্যানকে দেওয়া টাকা চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে এসে নিমাইচড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাজাহান আলী (সাজুর) বাড়িতে আমাকেসহ বাকি দুজনকে ডেকে নিয়ে গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি রাতে ফেরত দিয়েছেন। আর টাকার বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে নিষেধ করেছেন। বরং বললে সমস্যা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত , চাটমোহর উপজেলাধীন নিমাইচড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বহরমপুর গ্রামের তারা স্থায়ী বাসিন্দা। তারা গত ২০১৯ সালের প্রথম দিকে নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান এএইচএম কামরুজ্জামান খোকন এর নিকট সরকারি ঘর বরাদ্ধ চাইলে তিনি বলেন সরকারি ঘর পেতে ২০ হাজার করে টাকা লাগবে। পরে তারা এনজিও থেকে কিস্তির মাধ্যমে টাকা তুলে ৩ জন চেয়ারম্যানকে পৃথকভাবে মোট ২৩ হাজার টাকা প্রদান করেন। তারা হলেন ১। পরেশ চন্দ্র দাস ৫ হাজার , ২। জুসনা রাণী ৮ হাজার, ৩। সোনেকা খাতুন ১০ হাজার টাকা মোটা ২৩ হাজার টাকা।কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খোকন তাদের ঘর দেয় নি। আবার তাদের প্রদানকৃত টাকাও ফেরতও দিচ্ছে না। বরং তারা চেয়ারম্যানের কাছে ঘরের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে চেয়ারম্যান তাদেরকে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন।