প্রায় ১৮ বছর পর দেশে ফেরার পথে বড় এক ধাপ এগোলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পাস হাতে পাওয়ার মধ্য দিয়ে তার দেশে ফেরার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা জারনাজ রহমান নিজের ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ, বাবা আজ কিছুক্ষণ আগে ট্রাভেল ডকুমেন্ট হাতে পেয়েছেন।” এই তথ্য প্রকাশের পরই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার নতুন মাত্রা যোগ হয়।
বিএনপি সূত্র জানায়, দেশে ফেরার প্রস্তুতি হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছিলেন তারেক রহমান। পরদিনই সেই আবেদন নিষ্পত্তি করে তাকে ট্রাভেল পাস দেওয়া হয়। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থান করায় মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি আর বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাননি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে ফিরতে ট্রাভেল পাসই একমাত্র উপায় ছিল।
বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার জানান, মেয়ে জাইমাকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান। ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টার পর তাকে বহনকারী বিমান ঢাকায় অবতরণ করার কথা রয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হবে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে অভ্যর্থনা কমিটি। কমিটি ইতোমধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং অভ্যর্থনার স্থান নির্ধারণ নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।
সম্ভাব্য জনসমাগম প্রসঙ্গে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হবে ঐতিহাসিক। এ উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” তিনি জানান, নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেন ও বগি রিজার্ভের আবেদনও করা হয়েছে।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ১৮ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তি পান তারেক রহমান। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে লন্ডনে যান তিনি। দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে এবার তার দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ ও প্রত্যাশা দেখা যাচ্ছে।
এদিকে, একই দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে আশাব্যঞ্জক তথ্য দিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, এক মাসের চিকিৎসার পর এখন উনার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় স্থিতিশীল।” তিনি জানান, ওইদিন খালেদা জিয়ার একটি ছোট প্রসিডিউর সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি এখন আইসিইউ সুবিধাসংবলিত কেবিনে চিকিৎসাধীন।