ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শাহবাগ মোড়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (ছাত্রদল) বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল একপর্যায়ে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল তিনটার কিছু পর থেকে। শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মহানগর এবং অন্যান্য ইউনিটের নেতারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন— ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘বিচার চাই বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার চাই’। তারা বলেন, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অবহেলা এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে গড়িমসি হচ্ছে।
ছাত্রদল দাবি করে, হত্যার প্রায় এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়নি। এর আগে রোববার (১৮ মে) একই দাবিতে দুই ঘণ্টার মতো শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিল ছাত্রদল। সেদিন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগও দাবি করেছিলেন ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা।
এছাড়াও তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন, “সরকার যদি এ ঘটনায় সদিচ্ছা না দেখায়, তাহলে যমুনা ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে রাত ১১টার দিকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন বুধবার (১৪ মে) সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার পর কেটে গেছে এক সপ্তাহের বেশি সময়, এখনও গ্রেপ্তারের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায়।
ছাত্রদলের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার এবং রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে নতুন করে বিতর্ক ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সূত্র: এফএনএস