ঢাকার মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনকে ১৩৩ কোটি টাকা পাচারের মামলায় জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকার মহানগর হাকিম এম এ আজহারুল ইসলাম এ আদেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সায়েদুর রহমান ইমরানকে আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, ইমরান তার সহযোগী তৌহিদুল আলম জেনিথের সহায়তায় ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে গরু পাচার করে নিয়ে আসতেন। তদন্তের জন্য ইমরানকে ভবিষ্যতে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ কারণে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইমরানকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়।
ইমরানের পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, তার মক্কেলকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তারা আরও জানান, ইমরান ও তার পরিবারের সদস্যরা ১৯৫২ সাল থেকে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। তাই তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা উচিত ছিল।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ইমরানের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গতকাল সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা থেকে ইমরানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ইমরান হোসেন ও তার প্রতিষ্ঠান সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় অর্থপাচার, চোরাচালান ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ এবং সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ থেকে সাতজন অজ্ঞাত আসামিকেও মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও তার সহযোগীরা অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি, চোরাচালান ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১৩৩ কোটি টাকা পাচার করেছেন। এর আগে ইমরানের ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলাও রয়েছে।
সাদিক অ্যাগ্রো ও ইমরান হোসেন বেশ কয়েকবার আলোচনায় এসেছেন। গত বছর ঈদুল আজহার আগে কোটি টাকার দামের ‘বংশ মর্যাদাসম্পন্ন গরু’ ও ছাগলের দাম ১৫ লাখ টাকা চাওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েন ইমরান। ১৯ বছর বয়সী তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার চুক্তি করেছিলেন। পরে ইফাতের বাবা এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
২০২১ সালের জুলাই মাসে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের ১৮টি গরু ধরা পড়ে। সাদিক অ্যাগ্রো ‘শাহিওয়াল’ নাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গরুগুলো আমদানি করেছিল। ওই সময় গরু আমদানির নথি জাল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
সূত্র: এফএনএস