প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে জুলাই বিপ্লবে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বললেন, বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করতে গেলে অবিচার হয়ে যায়। বিচারের মূল জিনিসটা হলো এটা সুবিচার হতে হবে, অবিচার যেন না হয়। আমরা অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম বলেই এই সংগ্রাম হয়েছে, এই আত্মত্যাগ হয়েছে। আমরাও যদি অবিচারে নামি, তাহলে তাদের (ক্ষমতাচ্যুত সরকার) আর আমাদের মধ্যে তফাৎটা থাকলো কোথায়। আমরা অবিচারে নামবো না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা অপরাধী তাদেরকে আমরা পুলিশের হাতে, আইনের হাতে সোপর্দ করবো। আর যারা অপরাধী নয়, পুলিশের হাতে দেওয়ার মতো নয়, তাদের মানুষ করবো।
তিনি বলেন, আমরা একযোগে যত তাড়াতাড়ি পারি, একটা সুন্দর দেশ বানাবো। যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। যারা অপরাধী নয়, তাদের সৎপথে নিয়ে আসতে হবে।
এ সময় দেশে কোনো সহিংসতা ও হানাহানি যেন না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য জুলাই বিপ্লবে শহীদদের পরিবার ও আহতদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে এ সময় তিনি বলেন, সবসময় ভাবি যাদের কারণে, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে দেশটাকে আমরা নতুন বাংলাদেশ বলার সাহস করছি, তাদের এই ত্যাগ কোনো নিক্তি দিয়ে মাপা যায় না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদের ইতিহাসের স্রষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করে ড. ইউনূস বলেন, আপনারা জীবন্ত ইতিহাস। মনের গভীর থেকে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যে জাতি ইতিহাস স্মরণ করতে পারে না, তারা জাতি হিসেবে গড়ে ওঠে না। আজ থেকে আপনারা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অংশ হলেন। এটা হলো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি। এর বাইরেও আপনাদের দায়িত্ব সমাজের সবাইকে গ্রহণ করতে হবে।
এদিন ২১টি জুলাই শহীদ পরিবার ও ৭ জন আহতের মধ্যে চেক হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে সহায়তা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ড. ইউনূস। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
সূত্র : এফএনএস