1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

জমির জন্য পুলিশে চাকরি না হওয়া আসফিয়াকে জমি দিবেন তিনি

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৮৩ সময় দর্শন
জমির জন্য পুলিশে চাকরি না হওয়া আসফিয়াকে জমি দিবেন তিনি

পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষার সাফল্যের সঙ্গে সবগুলো ধাপ অতিক্রম করলেও কেবল ‘জমি নেই’ এই কারণে চাকরি পাচ্ছেন না আসপিয়া ইসলাম। ভগ্ন হৃদয়ে বরিশাল পুলিশ লাইন্সের সামনে বসে থাকা তার ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। হৃদয়বিদারক ছবিটি দেখে দারিদ্র্য আসপিয়ার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের মৃত কফিল উদ্দিন মেম্বারের ছেলে মো. মেজবা উদ্দিন।

তিনি বলেন, জামি লিখে দিলে যদি অসহায় মেয়েটি চাকরি পায়, তাহলে তিনি নিজের জমি তার নামে লিখে দিবেন। এ ক্ষেত্রে জমির দলিলের খরচও তিনি বহন করবেন বলে জানিয়েছেন। এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।

জানা গেছে, বরিশালের হিজলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেছেন আসপিয়া ইসলাম। ১৫ বছর ধরে উপজেলার খুন্না-গোবিন্দপুর গ্রামের অন্য একজনের জমিতে থাকেন। আসপিয়ার বাবা সফিকুল ইসলাম মারা গেছেন। পরিবারে তারা তিন বোন, এক ভাই ও মা। ভাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার আয় দিয়েই চলে সংসার।

আসপিয়া জানান, বরিশাল জেলায় পুলিশ কনস্টেবলের শূন্য পদে লোক নিতে সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অনলাইনে আবেদন করলে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও উত্তীর্ণ হন। এরপর ২৪ নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া। ২৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে চিকিৎসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তাতেও উত্তীর্ণ হয় সে।

সর্বশেষ ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও আসপিয়া উত্তীর্ণ হয়।কিন্তু চূড়ান্ত নিয়োগের আগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসপিয়া ও তার পরিবারকে ‘ভূমিহীন’ উল্লেখ করা হয়। বুধবার জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রতিবেদন জমা দেন হিজলা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আব্বাস।

আসপিয়া বলেন, ‘আমি যোগ্যতাবলে সাতটি ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত নিয়োগের অপেক্ষায় ছিলাম। এর মধ্যে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়ে দেন- চাকরি পেতে হলে নিজেদের জমিসহ ঘর দেখাতে হবে। কিন্তু আমাদের কোনো জমি নেই। আমরা একজনের জমিতে বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছি। জমি নেই বলে আমার চাকরি হবে না-এটা বিশ্বাস হচ্ছিল না। বুধবার দুপুরে ডিআইজি স্যারের কাছে গিয়ে তাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করি। কিন্তু আইনে বাধা থাকায় কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।’

বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, ‘যোগ্যতা থাকার পরও শুধু ভূমিহীন হওয়ায় মেয়েটির চাকরি হবে না-এটা মানা যায় না। পৃথিবীতে কোনো একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেক আইন পরিবর্তন হয়েছে। প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করে হলেও মেয়েটিকে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়ার উচিত।’

জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘দেশের কোথাও যদি তাদের ভূমি থাকে তাহলে সেটাই স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’

বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও চাকরি না হওয়া দুঃখজনক। ওই মেয়েটির পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে জমি-ঘর প্রদানের মাধ্যমে একটি স্থায়ী ঠিকানার ব্যবস্থা করা হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host