অনলাইন ডেস্কঃ
রাজধানীর পল্লবীতে কলেজ পড়ুয়া তিন বান্ধবী বাসা থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, স্কুল সার্টিফিকেট ও দামী মোবাইল ফোন নিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছেন। নিখোঁজরা হলেন মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের ছাত্রী কাজী দিলখুশ জান্নাত নিসা, দুয়ারিপাড়া কলেজের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা ও পল্লবী ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী স্নেহা আক্তার। তারা দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের পোশাক পড়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তারা। তিন শিক্ষার্থীর স্বজনদের অভিযোগ, বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচারকারী চক্রের সদস্যরা ওই তিন বান্ধবীকে তুলে নিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় নিখোঁজ নিসার মা মাহমুদা আক্তার টিকটকের পরিচিত মুখ জিনিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন সহোদর তরিকুল ও রকিবুল। পুলিশ দুই ভাইকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
অভিযোগে মাহমুদা জানান, তার মেয়ে নিসা ও তার দুই বান্ধবী কানিজ ফাতেমা ও স্নেহাকে বিদেশে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘরছাড়া করেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। তাদের প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ৩জন পরিবারের কাউকে কিছু না বলে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে নিজ নিজ বাসা থেকে একযোগে বের হয়। এসময় সবাই বাসা থেকে কয়েক লাখ টাকা, গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও দামি মোবাইল নিয়ে গেছে।
জান্নাতের বড় বোন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী কাজী রওশন দিল আফরোজ জানান, জান্নাত ও তার বান্ধীদের বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখানোর কারণে তারা পরিকল্পনা করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনজনই কলেজের পোশাক পরে, কাঁধে কলেজের ব্যাগ ঝুলিয়ে বের হয়েছেন। তাদের উধাও হওয়ার পেছনে প্রতিবেশী তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়ার হাত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তরিকুল আমার বোনের সঙ্গে প্রায় সময় কথা বলত। তরিকুল তাকে (নিসা) বলত তিনি অনেক বড় হ্যাকার। আর অনেক বড় কোম্পানির মালিক। আমেরিকায় লোক পাঠায়। আমার বোন নিসা বাসায় এসে আমাকে প্রায় সময় বলত- আপু তরিকুল তোমাকে তার কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার পদে চাকরি দেবে। জিনিয়া নামে তরিকুলের এক টিকটক বান্ধবী রয়েছে। জিনিয়া আমার ছোট বোন ও তার বান্ধবীদেরও পরিচিত। তিনজন নিখোঁজ হওয়ার পর জিনিয়ার বাসায় গিয়েছিলাম ওদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে। কিন্তু জিনিয়া দেখা করেনি। রহস্যজনক কারণে তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে।’
‘ঘটনার পর আমরা তরিকুলের বাসায় গিয়ে জানতে পারি, তরিকুল ও তার বড় ভাই রকিবুল বৃহষ্পতিবার থেকে বাসায় নেই। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাচ্ছে তাদের স্বজনরা। আমাদের বদ্ধমূল ধারণা তরিকুল ও জিনিয়ার পরিবার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা জানে আমার বোন ও তার বান্ধবীরা কোথায় আছে’, বলেন তিনি।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজিব খান শুক্রবার রাতে দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, নিখোঁজ এক শিক্ষার্থীর মা ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত তরিকুল ও রকিবুলকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরেক অভিযুক্ত জিনিয়া বর্তমানে ফরিদপুরে রয়েছেন। তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানান, একসঙ্গে ৩ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।