পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় পৃথক ঘটনায় এক কিশোর ও এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।
দু’টি ঘটনাই ঘটেছে মঙ্গলবার (২৯ জুন) উপজেলার ভেড়ামারা ও শ্রীপুর গ্রামে।
পুলিশ জানায়,অ্যন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় রাজীব (১৮)নামের এক ছেলে অপরাহ্নে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। সে উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মতলেব হোসেনের ছলে। খবর পেয়ে সেখানে যান ওই ইউনিয়নের বিট পুলিশিং অফিসার এস আই রমজান। তিনি প্রাথমিক তদন্তের পর লাশের ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন।
অপর ঘটনা ঘটেছে উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামাড়া গ্রামে। এখানে রাখী (১৭)নামের একটি মেয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার পিতার নাম আব্দুর রশিদ। রাখী উদয়ন একাডেমীর দশম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, ছয় মাস আগে একই গ্রামের মোকছেদ প্রামাণিকের ছেলে সুজন (সেনাবাহিনীর সদস্য)এর সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়েতে মোটা টাকা যৌতুক লেদ-দেন হয়। গত সোমবার রাতে মোবাইল ফোনে স্বামীর সাথে ঝগড়া হয় এবং তার জের ধরে মেয়েটি পরদিন মঙ্গলবার ভোরে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে সেখানে যান ওই ইউনিয়নের বিট পুলিশিং অফিসার এস আই এনামুল। তিনি প্রাথমিক তদন্তে কোনো অভিযোগ পাননি। তবে মেয়েটি গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের ডাবের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে বলেই প্রমাণ মিলেছে। তার হত্যার ব্যাপারে কেউ প্ররোচনা দিয়ে থাকলে বা মেয়েটির অভিবাবক কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক ব্যক্তি জানান,রাখীর মায়ের সৃষ্ট একটি সমস্যার কারণে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খারপ সম্পর্ক যাচ্ছিল। আবার কেউ কেউ বলেন,সুজনের অন্য এক নারীর সাথে সম্পর্ক থাকায় সম্প্রতি দু’জনের মধ্যে দুরত্ব বাড়ে।
তবে একাধিক ব্যক্তি বলেন,রাখীর বাবা আব্দুর রশিদ মেয়ের জন্য ৬/৭ লাখ টাকা দিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য জামাই পছন্দ করে বিয়ে দেন। মেয়েটি নাবালিকা হওয়া সত্তেও এই বিয়ের নিবন্ধন করেন ওই ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার।
জানা যায়, মেয়েটি এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। যার পড়ালেখা আর আনন্দ-স্ফুর্তি করে সময় কাটানোর কথা তার ঘারে চাপানো হয়েছে সংসারের ভারী বোঝা! ফলে ৬ মাস যেতে না যেতেই ভুল বোঝাবুঝির মধ্যে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তার জীবন। এ কারণেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় রাখী। এলাকার অনেকেই বলছেন নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়েই অকালে প্রাণ গেল তার।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মু: ফয়সাল বিন আহসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লাশ দু’টো ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেলা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় পৃথক দুটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।