ভাঙ্গুড়া(পাবনা)প্রতিনিধি :
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচণাদানকারীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। উপযুক্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে এসব ঘটনায় পুলিশও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এছাড়া সামাজিক দেনদরবারও এর একটি কারণ।
গত ৭ জুলাই উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কালিকাদহ গ্রামে বিয়ের তিনমাস পরে মিথ্যার আশ্রয়ে তালাক নামায় স্বাক্ষর নেওয়ায় গৃহবধূ মৌমিতা পারভীন গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেন। মৌমিতার স্বামী কামরুল ইসলাম এই আত্মহত্যার প্ররোচণাদানকারী।
গত ২৮জুলাই ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভাঙ্গুড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে বিয়ের পাঁচবছর পর তালাক দেওয়ার কথা শুনে গৃহবধূ আনজুয়ারা খাতুন গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেন। তার স্বামী আবুল হাশেম এই আত্মহত্যার প্ররোচণাদানকারী।
উপজেলার মন্ডুতোষ ইউনিয়নের মন্ডুতোষ গ্রামে জমি লিখে নিতে গৃহবধূ মিনা খাতুনকে স্বামী আব্দুল খালেক ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করতেন। এরপর গত ২২ জুন ওই গৃহবধূ নিজ ঘরের সাবের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই হত্যার পিছনেও প্ররোচণাদানকারী ওই নারীর স্বামী আব্দুল খালেক।
অথচ এসব ঘটনার জন্য থানায় কেবল ইউডি মামলা হয়। মৃত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকেও মামলা করতে চায়না কেউ। আবার সামাজিক শালিসকারীরাও বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে দেনদরবারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কেউ কেউ আবার মৃতের সন্তান-সন্ততি অথবা তার বাবা-মায়ের প্রতি অতি উৎসাহ দেখিয়ে মায়াকান্না করেন- এই বলে যে, যা হবার হয়েছে,কিছু টাকা পয়সা নিয়ে মিটিয়ে ফেলাই ভালো ! যার ফলে দোষ করেও শাস্তির আওতায় আসছে না আত্মহত্যায় প্ররোচণাদানকারী বা সহায়তাকারী অপরাধীরা।
এ বাপারে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: নাজমুল হক বলেন, বাংলাদেশ দন্ড বিধির ৩০৬ ধারা অনুযায়ী যদি কেউ কাউকে হত্যার মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য আত্মহত্যার প্ররোচণা দেয় বা সহায়তা করে এবং তার পর যদি সেই ব্যক্তি আত্মহত্যা করে তাহলে প্ররোচণাদানকারী বা আত্মহত্যায় সহায়তাদানকারী হিসাবে তার শাস্তির বিধান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন,বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়,ঘটনার আগে এভাবে প্ররোচণা দেওয়া হয়েছে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়না বরং রাগ করে অথবা অন্য কোনো ঘটনার কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। সে কারণেই আত্মহত্যায় প্ররোচণাদানকারী বা সহায়তাকারীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়না।