1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন

টিকা পাবেন ১৪ কোটি মানুষ

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১
  • ১২৪ সময় দর্শন
করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঁচ ধাপে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সকল টিকা দেয়া হবে বিনামূল্যে। এজন্য গ্রহণ করা হয়েছে ২৫ হাজার পাঁচ শ’ কোটি টাকার প্রকল্প। টিকা কেনার অর্থ সংগ্রহে ইতোমধ্যে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স এ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ। গৃহীত প্রকল্পে টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন ও জেলা পর্যায়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সম্প্রসারণের কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেশীয় অর্থায়নের পাশাপাশি ১০টি দাতা সংস্থার কাছ থেকে সহজশর্তে ঋণ পাবে সরকার। ঋণ সহায়তা দিয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বজুড়ে করোনা সঙ্কট চলছে।
জানা গেছে, করোনার টিকা কিনতে সবচেয়ে বড় অঙ্কের ঋণ সহায়তা ঘোষণা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। সংস্থাটির কাছ থেকে টিকা কিনতে প্রায় ১ বিলিয়ন ইউএস ডলার যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা আসছে। আগামী মাসে এডিবির সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। করোনার টিকা ক্রয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সভা করেছেন। ওই সভার কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের মোট জনগণের ৮০ শতাংশকে ভ্যাকসিন তথা টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর নিকট চিঠি দিয়ে অর্থায়নের অনুরোধ জানানো হয়। এর পাশাপাশি আগামী বাজেটেও টিকা কিনা ও করোনা মোকাবেলায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হবে। সরকারের চিঠি পাওয়ার পরপরই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। বিশ্বব্যাংক এরই মধ্যে ইআরডিকে জানিয়েছে, করোনার টিকা কেনার জন্য তারা ৬০০ কোটি ডলারের যে তহবিল গঠন করেছে, সেখান থেকে ঋণ পেতে আবেদন করা ১০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নামও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব শাহাবুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, টিকা কেনার জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। আশা করছি, শীঘ্রই ঋণের এই অর্থ দেশে আসবে।
জানা গেছে, টিকা কিনতে এডিবির পর সবচেয়ে বড় সহায়তা আসছে বিশ্বব্যাংক থেকে। অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি), জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) ঋণ সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের টিকা দেশের সবাই পাবেন। এজন্য টিকা কিনতে যত টাকা প্রয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে তা ব্যয় করা হবে। সবার আগে মানুষের জীবন। আগামী বাজেটেও করোনার টিকা কিনা এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহে বিশেষ বরাদ্দ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। করোনার টিকা কিনতে বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থ দেশীয় মুদ্রায় ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকার মতো (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) টিকা কিনতে বাংলাদেশকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। করোনা মহামারী থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষায় ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ঋণ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ইআরডি’র তথ্য অনুযায়ী, করোনার টিকা কেনার জন্য ইতোমধ্যে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছে মোট ২৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার, জাইকার কাছে ৫০ কোটি ডলার, এআইআইবির কাছে ৫০ কোটি ডলার, জার্মানির কাছে ২৫ কোটি এবং ফ্রান্সের কাছে ২৫ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আলাদা চিঠি পাঠিয়েছে ইআরডি। তবে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এখন আরও বেশি টাকা চাওয়া হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে বাংলাদেশে। প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়ছে। এ কারণে দাতা সংস্থার কাছে ঋণ চাওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বলেন, দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচী শুরুর মাধ্যমে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বাংলাদেশ দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছে। টিকাদান কর্মসূচীর লক্ষ্য অর্জনে মানুষের দ্রুত ও সাম্যতার সঙ্গে ভ্যাকসিন পাওয়া জরুরী। বিশ্বব্যাংকের এই অর্থায়ন জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণের জন্য দ্রুত ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি)। সংস্থাটি স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে বাংলাদেশকে সাড়ে তিন কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শীঘ্রই সরকারের সঙ্গে আইডিবির এ-সংক্রান্ত চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এই টাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইটিএফসি) থেকে আড়াই কোটি ডলার ঋণ নিতে যাচ্ছে সরকার। ১৬ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ফ্রান্সের এএফডি। এ ছাড়া করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এক কোটি ডলার ঋণ দেবে ইফাদ।
জানা গেছে, পাঁচ ধাপে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসের বিনামূল্যের টিকা পাবেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম ধাপের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। টিকার প্রাথমিক সফলতায় দেশের সাধারণ মানুষ এখন এই ভ্যাকসিন নিতে এগিয়ে আসছে। বাড়ছে টিকা গ্রহণে আগ্রহী নিবন্ধনকারীর সংখ্যা। এতে করে করোনাভীতি দূর করে সাধারণ জনগণ অর্থনৈতিক কর্মকা-ে আবার ফিরে আসছেন। ফলে জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি এই টিকার অর্থনৈতিক গুরুত্ব এখন অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার চার কোটি ডোজ কেনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগে বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ কেনার যে চুক্তি করেছে, তার ভিত্তিতে গত দুই মাসে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও ১২ লাখ টিকা বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন। আর এখন পর্যন্ত ৪৫ লাখের বেশি মানুষ টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্সের এক কোটি নয় লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পাবে- যা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে বলা হচ্ছে।
পাঁচ ধাপে প্রায় ১৪ কোটি মানুষ টিকা পাবেন ॥ পাঁচ ধাপে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে। তিন ভাগে মোট পাঁচ ধাপে এসব টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’র তিন কোটি ডোজ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে ২১ জানুয়ারি ২০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড বাংলাদেশকে উপহার পাঠায় ভারত সরকার। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের হাতে রয়েছে ৭০ লাখ ডোজ টিকা রয়েছে। এছাড়া মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশকে আরও ১২ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছেন। ভারত ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোন ভ্যাকসিন ক্রয়ে চুক্তি করেনি সরকার। বর্তমানে টিকাদান কর্মসূচী চলমান রয়েছে।
করোনা মোকাবেলায় বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ॥ করোনা মোকাবেলায় আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হবে। বাড়বে স্বাস্থ্যখাতের থোক বরাদ্দ। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চলতি বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি জরুরী তহবিল গঠন করা হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা শুরু হওয়ায় এই বরাদ্দের পরিমাণ দ্বিগুণ করা হতে পারে। সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন আমদানিতে। এলক্ষ্যে অর্থ সংস্থানে বিদেশী দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তা ও অনুদান চাওয়া হয়েছে। করোনা নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি নির্ধারিত বরাদ্দের পরেও যদি প্রয়োজন হয় তাহলে জরুরী প্রয়োজনে সিসিইউ, আইসিইউ, আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু, সহায়ক স্বাস্থ্যসেবা (সাপোর্ট কেয়ার), করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কিট (সরঞ্জাম) এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে এ টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার হয় এমন সব পণ্য আমদানিতে শতভাগ শুল্ক ছাড়ের সুবিধা পাবেন এ শিল্পের উদ্যোক্তারা। ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনে থাকছে সব ধরনের ট্যাক্স ও ভ্যাট সুবিধা। কিছু শর্ত সাপেক্ষে হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার ওষুধ ও সেবা সামগ্রী সম্পূর্ণ ফ্রি দেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host