রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আলোচিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক। এই বৈঠককে বিএনপি ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে উল্লেখ করলেও, দেশের একটি রাজনৈতিক দল এতে অস্বস্তি প্রকাশ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির দলীয় সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সরকারের সঙ্গে যখন দূরত্ব বাড়ছিল, তখন ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে তারেক রহমানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারা সংঘর্ষের পথে না গিয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছেন। একেই বলে রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্ব।”
তিনি দাবি করেন, দেশের জনগণ এই বৈঠককে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক শক্তি এই সমঝোতা ও ঐক্যের চেষ্টাকে হজম করতে পারছে না।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, লন্ডন বৈঠক পছন্দ না হওয়ায় একটি দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, “যখন নির্বাচন নেই, তখন তাদের অনেক গুরুত্ব থাকে। কিন্তু যখন নির্বাচন হবে, নতুন সরকার আসবে, তখন তাদের গুরুত্ব কমে যাবে—এ কথা তারা জানে। তাই নির্বাচন নিয়ে তাদের আপত্তি, বিশেষ করে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে তাদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে।”
অনুষ্ঠানে দলীয় কাঠামো শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে বাছাইয়ের নির্দেশনা দেন ফখরুল। তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ নেব না, তবে ভালো মানুষদেরও বাদ দেওয়া যাবে না। যারা প্রমাণিতভাবে মাফিয়া, দখলদার, চাঁদাবাজ—তাদের ঠাঁই বিএনপিতে হবে না।”
এসময় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, “যারা আওয়ামী লীগের মতো আচরণ করে, মানুষের অধিকার হরণ করে, চাঁদাবাজি করে—তারা আসলে আওয়ামী লীগই হয়ে যায়। এসব চলবে না। বিএনপির কড়া নির্দেশ আছে—মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেই রাজনীতি করতে হবে।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দাবি নিয়ে আলোচনা চলছিল। তারই প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় লন্ডনে। এরপর দেশের রাজনীতিতে এই আলোচনার পালে হাওয়া লাগে। বিএনপি বলছে, এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দিকনির্দেশনা এসেছে, যা বহুদিনের রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাধানে সহায়ক হবে।
সূত্র: এফএনএস।