পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় প্রয়োজনের তুলনায় কম শিক্ষক দিয়ে চলছে প্রায় ৬শ শিক্ষার্থীর স্কুল। বিদ্যলয়টি ভাঙ্গুড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত, নাম শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জানাগেছে,এই বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৫৭০। গত কয়েক বছর এই সংখ্যা আরো বেশি ছিল। অথচ প্রধান শিক্ষকসহ পদ রয়েছে মাত্র ১১টি। এর মধ্যে একজন অবসরে গেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা নীতিমালা অনুয়ায়ী ৩৩জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক পদায়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে মোতাবেক এই বিদ্যালয়ে মোট ১৮জন শিক্ষক নিযুক্ত থাকার কথা ছিল। অথচ এখানে তার প্রয়োগ দেখা যায়নি। প্রধান শিক্ষক সরকারি কাজে যখন বাইরে থাকেন বা কোনো সহকারী শিক্ষক ছুটিতে যান,তখন সকল ক্লাশ পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ সময় পাঠদান মারাত্নকভাবে ব্যহত হয়।
অথচ এই উপজেলায় এমন অনেক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীর তুলনায় অনেক উদ্বৃত্ত শিক্ষক রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কখনোই শিক্ষক সমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে পাঠদানের ক্ষেত্রে অধিক শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের শিক্ষকের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। অপরদিকে স্বল্প শিক্ষার্থীর স্কুলের শিক্ষকরা রিলাক্সে চাকরি করেন। এতে রীতিমত বৈষম্য প্রতীয়মান হয়।
এ ব্যাপারে শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবা খন্দকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ছাত্র-ছাত্রী অনুপাতে সহকারী শিক্ষকের পদ সংযোজন ও শুন্য পদে দ্রুত পদায়নের জন্য বিষয়টি তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান,শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উপজেলার একটা সেরা স্কুল হলেও সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরাও এখানে ঘন ঘন পরিদর্শন আসেন কিন্তু সমস্যা সমাধানে তাদের আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন। এছাড়া ভবন সংকটের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও তারা উল্লেখ করেন।
বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সদস্য মো.আব্দুল হাকিম বলেন,উপজেলা শিক্ষা অফিস কিছুদিন আগে এই বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক ডেপুটেশনের জন্য প্রস্তাব পাঠালেও জেলা শিক্ষা অফিসার সেই আদেশ না দিয়ে আটকায়ে রেখেছেন। এতে শিক্ষার স্বার্থ ব্যহত হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেকেন্দার আলী বলেন,বিদ্যালয়টির পরিবেশ ও লেখা-পড়া দু’টোই ভালো। তাই ভবন ও শিক্ষক সংকট নিরসন করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাজমুন নাহার বলেন,গত মঙ্গলবার(১ অক্টোবর)উপজেলা শিক্ষা কমিটির মিটিং এ ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের একটি শুন্য পদে পদায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন হলো,অধিক শিক্ষার্থীর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংযুক্তি বা সমন্বয় বদলির উদ্যোগ না নিয়ে কেবল একটা পদ পূরণের হেতু কি ? এছাড়া কর্তৃপক্ষ নিজ অধিদপ্তরের নীতিমালা বাস্তবায়নে কেন অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন এর কারণও কারো বোধগম্য নয় ! কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার স্বার্থে এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।।