সাংবাদিক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তার সাজা পরোয়ানা রি-কল করেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হন তিনি।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন শফিক রেহমান। এরপর তিনি মামলার আপিল দায়েরের জন্য নকল ও তার বিরুদ্ধে দেয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার রি-কলের আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেন। এই বিষয়ে শফিক রেহমানের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, গত ২২শে সেপ্টেম্বর সাংবাদিক শফিক রেহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। আত্মসমর্পণপূর্বক আপিল দায়েরের শর্তে এই সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। শফিক রেহমান এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে মামলার নকল ও তার বিরুদ্ধে দেয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ফেরতের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আমরা খুব দ্রুত আপিল ফাইল করবো।
শেখ হাসিনা তার ছেলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছেন: এজলাস থেকে বের হয়ে সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, শেখ হাসিনা তার ছেলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছেন। ড. ইউনূস যখন জাতিসংঘে তরুণদের নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাতে একটা আলাদা ভালো লাগা ছিল। ’৫২ সালে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন, কিন্তু এবার ব্যাপারটা তা ছিল না। শিক্ষার্থীরা চাকরির জন্য আন্দোলন করেছেন, কারণ চাকরি নেই। এখন যেন এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর চাকরি হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- দেশের সব খাতে সংস্কার করতে হবে এবং তাতে ছাত্রদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা আন্দোলন করেছেন, তারা আজ কোথায়? সরকারকে এটা নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষার্থীরা যেসবের জন্য আন্দোলন করেছেন, সেগুলো যেন বাস্তবায়ন করা হয়। গত কয়েক মাসে যাদের চাকরি (সরকারি) দেয়া হয়েছে, তারা কতোটুকু যোগ্যতার ভিত্তিতে পেয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হোক। মামলা সূত্রে জানা যায়, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ই আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত সাংবাদিক শফিক রেহমান ও আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সহ ৫ জনকে পৃথক দুই ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত।
এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ২ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। ২০১৮ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মানবজমিন