গ্রামবাসীর কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান হচ্ছে এক কিলোমিটার রাস্তা। মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দপ্তরে বারবার ধরনা দিয়েছে গ্রামবাসী। কিন্তু কাজ হয়নি। শেষে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে চাঁদা তুলে শুরু করেছে রস্তার কাজ। এই বাস্তব গল্প পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ানে গ্রামের মানুষের। ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো বাধাই বাধা নায়,এই মন্ত্র এখন বেতুয়ান সকল মানুষের মুখে মুখে। ১০ হাজার মানুষের চাদার টাকায় তৈরি হওয়া রাস্তা সবার জন্যই দৃষ্টান্ত।
স্থানীয়রা জানান, গুমানি নদী হইতে মোঃ মোসলেম উদ্দিন খান এর বাড়ি পর্যন্ত ১ কি: মি: জোলা ভরাট করে রাস্তা নির্মান করছেন গ্রামবাসীরা। বেতুয়ান গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত জোলা অনেক দিন পূবেই এর কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। এ জোলো দিয়ে পানি আসা যাওয়ার বোন ব্যবস্থা না থাকায় এই জোলা এখন বেতুয়ান গ্রামের ১০ হাজার মানুষের অভিষাপ। এ অভিষাপ থেকে মুক্তি পেতে গ্রাম বাসি প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যায় করে অভিসাপ নামের জোলাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মান করছে। এ রাস্তা মির্মান হলে গ্রাম বাসীরমধ্যে ঘটবে এক মিলন মেলা। গ্রামবাসী সাঁকো পার হয়ে বাড়ির উপর দিয়ে মাঠের মধ্যে দিয়ে মেইন পাকা রাস্তায় উঠত। এভাবে দীর্ঘ দিন চলাচল করলেও এখন সাধারণ জনগণন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। জন্ম লগ্ন থেকে ওই গ্রামের জনসাধারণ ধান, চাল,রবি সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষিপন্য নিতে হয় মাথায় করে। অবশেষে গ্রাম বাসি বৌঠক করে সকলের আন্তরিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ি ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিয়ে প্রয় ১ কোটি টাকা ব্যায়ে রাস্তা নির্মান কাজ প্রায় শেষের দিকে। গত বছর ডিজার দিয়ে বালি ফেলে এ রাস্তার কাজ শুরু করা হয়েছে এবছর বর্ষা মৌষমে বালি ফেললে রাস্তা নির্মান কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে এলাকাবাসি।
ওই গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ মোঃ ময়নাল প্রামানিক বলেন, পানি ও বাড়ির উপর দিয়ে দিয়ে চলাচল করতে করতে জীবনটা কেটে গেল কিন্তু আমাদের ভোগান্তি শেষ হলো না। তবে রাস্তাটা হলে মরেও সান্তি পেতাম।
ঔ ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি মোঃ রিপন সরকার জানান, গ্রাম থেকে বের হবার একমাত্র এই রাস্তা বাড়ির উপর দিয়ে ধান-চালসহ বিভিন্ন কৃষিপন্য ও মালামাল পরিবহনে আমাদের অসহনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া ছেলে মেয়েরা বর্ষা মৌসুমে হাটু পানি ভেঙ্গে এক কিলোমিটার রাস্তা পারি দিয়ে স্কুল কলেজে যাওয়া আসা করে। গ্রামের কেউ অসুস্থ্য হলে তাকে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। গত কিছুদিন আগে আমার মায়ের লাশ নিতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে চেয়ারম্যান মেম্বারসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়েও কেউ এগিয়ে আসেনি। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসি মিলে টাকা তুলে নিজেরা শ্রম দিয়ে রাস্তা নির্মান করছি। যাহা ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারমান মোঃ বাকিবিল্লাহ ও পৌর মেয়র মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেলসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেত্রী বৃন্দ মিলে বালু ফেলার কাজ উদ্বোধন করেন।