মনে পড়ে সেই দিনগুলো যখন আপনার ছোট্ট শিশুর সঙ্গে চোখাচোখি হলেই নির্মল হেসে উঠতো সে? ফোকলা দাঁতের সেই হাসি, বিস্ময়ভরা চোখের চাউনি দেখলেই যেন দিনটা ভাল হয়ে যেত। এ ভাবেই ধীরে ধীরে চিনতে শেখে শিশু। গড়ে ওঠে সম্পর্ক। এই তাকানোর মধ্যেই বড়দের মস্তিষ্ক তরঙ্গের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয় শিশুর মস্তিষ্ক তরঙ্গের।
যা ভবিষ্যতে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত জরুরি বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজিস্ট ভিক্টোরিয়া লিয়ঙ্গ তাঁর গবেষণাগারে শিশুদের নিয়ে দু’টি পরীক্ষা করেন। প্রথম পরীক্ষায় ৮ মাসের ১৭টি শিশুকে নিয়ে গবেষণা করা হয়। শিশুদের ইইজি ক্যাপ, ইলেকট্রোড ঢাকা হেডওয়্যার পরিয়ে তাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের গতিবিধি পরীক্ষা করা হয়। শিশুদের একটি ভিডিও দেখানো হয়।
যেখানে পরীক্ষকও ইইজি ক্যাপ পরে নার্সারি রাইমস গাইছেন। গান গাওয়ার সময় মাথা দুদিকে ২০ ডিগ্রি হেলালেও দৃষ্টি রয়েছে সোজা শিশুর চোখের দিকে। গবেষণায় দেখা যায় ভিডিও দেখে শিশুর মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের গতিবিধি প্রায় মিলে যাচ্ছে ভিডিওর পরীক্ষকের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের গতিবিধির সঙ্গে।
দ্বিতীয় পরীক্ষায় সেই ভিডিওর পরীক্ষকই শিশুদের সামনে এসে বসেন। এ বারও শিশু এবং পরীক্ষক উভয়কেই পরানো হয় ইইজি ক্যাপ। দেখা যায় যখন শিশুদের সঙ্গে পরীক্ষকের চোখাচোখি হচ্ছে তখনই উভয়ের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের গতিবিধি হুবহু মিলে যাচ্ছে। চোখ সরিয়ে নিলেই কেটে যাচ্ছে তাল। গবেষণার পর লিয়ঙ্গ জানান, শিশুর সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে ও পরবর্তী জীবনে সেই সম্পর্ক ধরে রাখতে তাই ছোটবেলায় বড় ভূমিকা নেয় এই আই কনট্যাক্ট। কারণ, যখন দুজন মানুষের ব্রেন অ্যাক্টিভিটি সিঙ্ক করে তখন সুসম্পর্ক যেমন গড়ে ওঠে, তেমনই এক সঙ্গে কাজ করা প্রবণতা, কোঅর্ডিনেশনও উন্নত হয়। যা আমাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাদার, দুই জীবনের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।