ভাঙ্গুড়া সংবাদদাতা :
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রাসায়নিক সারের দাবিতে বুধবার বিকালে উপজেলা কৃষি অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে শতাধিক কৃষক। পরে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কৃষকরা জানান সার সংকটের কারণে গত এক মাস যাবত প্রতি ব্যাগ ডিএপি সার ৪৫০ টাকা বেশি দিয়ে কিনছেন তারা।
জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় সাত হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরিষা আবাদে ডিএপি সারের চাহিদা বেশি। এই সুযোগে স্থানীয় ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করছে।
সরকার যখন এক ব্যাগ ডিএপি সারের মূল্য ১০৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে তখন সংকট সৃষ্টি করে ৪৫০টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে।
বিক্ষুব্দ কৃষক আব্দুল মান্নান ও পলান মোল্লা বলেন,সরকার নির্ধারিত দামে তারা সার কিনতে পারছেন না। এর সাথে কৃষি অফিস জড়িত বলে তারা স্পষ্ট অভিযোগ করেন। তারা কৃষি প্রণোদনার সার বিতরণের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তারা আরো বলেন, কৃষি প্রণোদনা যাদের দরকার নেই এমন লোকজনকে সার দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা অনেকেই সেই সার বাজারে বিক্রি করেছেন।
উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের পাটুল গ্রামের কৃষক আলম হোসেন বলেন, সার কিনতে গেলে ডিলাররা বলেন সার নেই। তবে প্রতি বস্তায় ৩/৪শ টাকা বেশি দিলে ডিলারদের ঘরেই সার পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে কৃষি অফিসকে জানালেও কৃষি অফিসার ডিলারদের পক্ষে সাফাই গান। সম্প্রতি সার সংকট ও বেশি দামে বিক্রি বিষয়ে কয়েকটি পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়। তবুও কৃষি অফিসার ব্যবস্থা নেননি। এজন্য আজ বিক্ষুদ্ধ কৃষকরা অফিস ঘেরাও করেন।
কৃষক দলের ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন,ন্যায্য মুল্যে সার পাওয়া কৃষকের অধিকার। সরিষা মৌসুমকে সামনে রেখে সার নিয়ে কারসাজি সহ্য করা হবেনা। তিনি দাবি করেন ডিলাররা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কৃষি প্রণোদনা নিয়েও এলাকার প্রান্তিক চাষিদের ক্ষোভ রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন জাহান বলেন, সারের সংকট থাকলেও ইতিপূর্বে কৃষকরা কখনোই বিক্ষোভ করে নাই। তবে এবার কেন কৃষকরা সারের জন্য বিক্ষোভ করছে বুঝতে পারছি না। পর্যাপ্ত সার বরাদ্দ দেয়া সত্ত্বেও সংকট সৃষ্টি হচ্ছে ! এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপস পালের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষকদের বিক্ষোভ বিষয়ে অবগত হয়েছি। কৃষি কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে দ্রুত সময়ে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।