পাবনার চাটমোহরে পামওয়েল তেল ও বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে বানানো বিপুল পরিমাণ ভেজাল দুধ জব্দ করা হয়েছে।সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে একটানা দুপুর পর্যন্ত এনএসআই পাবনা টিমের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ও ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণের হাব সেন্টারে এই অভিযান পরিচালনা করেন। এছাড়া দুধ সংগ্রহ, মজুদ ও সরবরাহের অভিযোগে প্রাণ হাবের তিন কর্মকর্তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। একইসাথে ভেজাল দুধ তৈরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নারীসহ ৫ জনকে আটকের পর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে বেশ কয়েকটি পরিবার পামওয়েল তেল ও বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে নকল দুধ তৈরি করে আসছিল। প্রতিদিনই তৈরিকৃত বিপুল পরিমাণ ভেজাল দুধ ছাইকোলা চৌরাস্তা মোড়ে প্রাণ ডেইরী হাবের দুগ্ধ শীতলীকরণ সেন্টারে সরবরাহ করে আসছিল। এনএসআই’র সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী প্রথমে লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ভেজাল দুধ তৈরিকারকদের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় সেখান থেকে আটক করা হয় ৫ জনকে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছাইকোলা চৌরাস্তা মোড়ে প্রাণ ডেইরী হাবের দুগ্ধ শীতলীকরণ সেন্টারে অভিযান চালান।
সেখানে মজুদকৃত ৬ হাজার লিটার দুধ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দুধের মধ্যে তেল ও ডিটারজেন্টের উপস্থিতি পাওয়ায় জনসম্মুখে ভেজাল দুধ বিনষ্ট করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় অপরাধ স্বীকার করায় প্রাণ ডেইরী হাবের গুরুদাসপুর অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার পাবনার ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের শহিদুল সরকারের ছেলে শামসুল আলম (৩৬), সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চক চিথুলয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে জহির রায়হান (২৭) ও পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমচা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নাজমুল হোসাইন (৩৫)কে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, লাঙ্গলমোড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলাম (৪৫), সাইদুল ইসলামের ছেলে লিটন হোসেন (১৯), হযরত আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (৫০), খবির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসেন (২০) ও রিফাজ আলীর স্ত্রী মাজেদা খাতুন (৩৫)।
এ সময় এনএসআই পাবনার সহকারী পরিচালক এবিএম লুৎফুল কবিরের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের টিম, পাবনার অতিরিক্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আসলাম হোসেন ও থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। তিনজনকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অন্যদের নামে নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়েছে। ভেজাল দুধ তৈরির সাথে অন্য যারা জড়িত তারা পালিয়ে গেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’