প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তিনটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে। এগুলো হলো পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং এবং প্রক্সি ভোটিং। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ সহজ করতে এসব পদ্ধতির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই অনুযায়ী ইসি বিষয়টি নিয়ে গবেষণা ও পর্যালোচনা করছে।
ইসির গবেষণা ও সুপারিশের ভিত্তিতে তিনটি বিকল্প পদ্ধতি প্রস্তাব করা হয়েছে:
১. পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি: বিদ্যমান পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি কার্যকর নয় বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যালট প্রেরণ ও গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২. অনলাইন ভোটিং: বিশ্বের কয়েকটি দেশে অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। তবে ইউএনডিপির মতানুসারে, এই পদ্ধতি অনেক দেশে সফল হয়নি। ভারতে, পাকিস্তানে ও কিছু ইউরোপীয় দেশে পরীক্ষামূলকভাবে এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
৩. প্রক্সি ভোটিং: প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতিতে, একজন প্রবাসী ভোটার তাঁর নির্দিষ্ট এলাকার একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় এ পদ্ধতি চালু রয়েছে, তবে ভারতে এটি কেবলমাত্র সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য।
নির্বাচন কমিশন প্রথমে তিনটি পদ্ধতির জন্য পৃথক ‘সিস্টেম আর্কিটেকচার’ তৈরি করতে চায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামত নেওয়া হবে। আগামী ৭-৮ এপ্রিলের মধ্যে একটি কর্মশালা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে।
পদ্ধতিগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের কাজ শুরু হবে।
প্রবাসী ভোটাররা ভোট দিতে চাইলে তাদের এনআইডি নম্বর দিয়ে নির্দিষ্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটদানের ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে। যারা প্রক্সি ভোট দিতে চাইবেন, তাদের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য একজন প্রতিনিধিকে মনোনীত করতে হবে এবং তাঁর এনআইডির তথ্য প্রদান করতে হবে।
ইসি আশা করছে, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে প্রক্সি ভোট পদ্ধতিটি মোটামুটি বিস্তৃতভাবে কার্যকর করা সম্ভব হবে, আর পোস্টাল ব্যালট ও অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্র: এফএনএস