জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এ বছর বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। তার মতে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ ও জননিরাপত্তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত সাত মাসে আমরা আশা করেছিলাম, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, আইন ও শাসন ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি সংস্কার হবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কিছু উন্নতি হয়েছে, তবে তা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে কম। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব বলে আমি মনে করি না।”
গত বছর গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যান। এরপর গত ৮ ডিসেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। সম্প্রতি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। তবে নাহিদ ইসলামের বক্তব্য তার থেকে ভিন্ন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “যখনই নির্বাচন হোক, জাতীয় নাগরিক পার্টি তাতে অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে নির্বাচনের আগে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানো জরুরি। যদি আমরা এক মাসের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে তাৎক্ষণিক নির্বাচনের ডাক দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু যদি এতে বেশি সময় লাগে, তাহলে নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজন করা হলে তা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে না।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতিষ্ঠা ও নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের নতুন দল গঠনে সমাজের বিত্তশালী ও ধনী ব্যক্তিরা অর্থায়ন করছেন। আমরা শিগগিরই নতুন অফিস স্থাপন করব এবং নির্বাচনের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করব।”
নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, নির্বাচনী পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। অন্যদিকে, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা না হলে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র: এফএনএস