রাজধানীর শ্যামলীর শিশুমেলা মোড়ে পুনর্বাসন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) থেকে সরে এসে তারা শিশুমেলা মোড়ে অবস্থান নেন, যা মিরপুর রোড ও শ্যামলী-আগারগাঁও সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পঙ্গু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে আহতরা সড়ক অবরোধ করেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাদের দাবি, সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা কোরবান শেখ হিল্লোল জানান, “আজ বিদেশি ডাক্তাররা পরীক্ষা করে মতামত দিয়েছেন যে, আমাদের শরীরিক অবস্থা যারা বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছে তাদের সমান। কিন্তু এখনও আমাদের উপযুক্ত চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
সড়কে অবস্থান নেওয়া নাঈম শেখ বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত শুধুই আশ্বাস পেয়েছি, কিন্তু কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা করব এবং প্রয়োজনে সচিবালয় ঘেরাও করব।”
আন্দোলনকারী মোহাম্মদ শরীফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের কী হচ্ছে, তারা কী খাচ্ছে, কোথায় থাকছে—এসবের কোনো খোঁজ নিচ্ছে না সরকার। আমরা বুঝে গেছি, আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে।”
শিশুমেলা মোড়ে অবস্থানের ফলে মিরপুর রোডের উভয় দিকের পাশাপাশি শ্যামলী-আগারগাঁও সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে থাকায় জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার হন। পুলিশের পক্ষ থেকে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প রুট ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ডিএমপির শেরেবাংলা নগর ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার উদয় কুমার সাহা জানান, “আগারগাঁও থেকে শ্যামলী ও শিশুমেলাগামী ছোট গাড়িগুলো ৬০ ফিট দিয়ে এবং বড় গাড়িগুলো পাসপোর্ট অফিসের সামনে দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
দুপুর ২টা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। তবে সরকারের তরফ থেকে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা বলা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করছেন আহতরা।
আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করেছেন যে, যদি দ্রুত তাদের দাবি বাস্তবায়িত না হয়, তবে আন্দোলন আরও তীব্রতর করা হবে।
সূত্র: এফএনএস