চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচ আসামি হাইকোর্টের রায়ে খালাস পেয়েছেন। একইসঙ্গে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
২০০৪ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক করা হয়। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবারের রায়ে আদালত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দেন। অন্যদিকে ভারতের উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াকে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এছাড়া বাকি ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক সাহাবুদ্দিন আহমেদসহ বেশ কয়েকজনের সাজা সংশোধন করা হয়েছে। আর জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম মৃত্যুবরণ করায় তাদের মামলা অকার্যকর হয়ে গেছে।
বাবরের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “এই রায়ের ফলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকল না।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার বলেন, “আমরা রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর আপিল করার সিদ্ধান্ত নেব।”
এই রায়ের মাধ্যমে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সমাপ্ত হলো। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র: এফএনএস