পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করার অভিযোগ উঠেছে আঃ জব্বার (৬৫) নামে এক মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে।
তিনি উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ও দুধবাড়িয়া এম দ্বিমুখী মাদ্রাসার সুপার। পুকুর খননের ফলে এ উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষি জমির পরিমাণ।
এদিকে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েও না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার গোবিন্দপুর মৌজায় তার প্রায় আড়াই বিঘা ফসলি জমিতে একটি ভেকু (স্কেবেটর) মেশিন বসিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুকুর কাটার সঙ্গে সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ভেকু মেশিন ভাড়ায় এনে জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তি ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর কেটে চলছেন। এসব খননকৃত মাটি এলাকার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করছে। প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শত টাকা দরে।
ভেকু চালক রুবেল বলেন, পুকুর খননের জন্য গোবিন্দপুর গ্রামের সোহেল রানা ঢাকা থেকে খননযন্ত্রটি এনেছেন। প্রতি ঘন্টায় ১৬০০ টাকা করে চুক্তি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নদী-নালা খাল-বিল বাদে প্রায় ১০ হাজার ৭৮০ হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে।
পথচারি ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাটি বহনকারি গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তাগুলোর চরম ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ বাকি বিল্লাহ বলেন, কৃষি জমি সুরক্ষায় আইন আছে। পুকুর খনন বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। না হলে অচিরেই এখানে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, পুকুর খননের ক্ষতিকর দিক মাসিক সমন্বয় সভায় একাধিকবার তুলে ধরলেও খনন বন্ধ হয়নি। এভাবে পুকুর খনন চলতে থাকলে উপজেলার আবাদি জমি আশঙ্কাজনক হারে কমবে।
ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুর খননকারী আব্দুল জব্বার বলেন, এসিল্যান্ডের অনুমতি নিয়েই পুকুর খনন করছি। এসিল্যান্ড বলেছেন খননকাজে কেউ বাধা দিলে তার কাছে পাঠিয়ে দিবেন।
পুকুর খননের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপাশা হোসাইন এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খননের ওপর সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। কেউ ফসলি জমিতে পুকুর খনন করলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কেউ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়, আর তার অভিযোগ যদি আমার কাছে আসে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।