অনলাইন ডেস্ক: করোনাকালে সামাজিক অনুষ্ঠানে নানা সীমাবদ্ধতা থাকায় ফুল ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। বেশ কিছুদিন বেচাকেনায় ভাটা থাকলেও চলতি মাসের কিছু আয়োজনকে ঘিরে নতুনভাবে আশা সঞ্চয় করেছেন ফুল ব্যবসায়ীরা।
আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে ভালোবাসা সপ্তাহ। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি রোজ ডে, ৮ ফেব্রুয়ারি প্রোপোজ ডে, ৯ ফেব্রুয়ারি চকোলেট ডে, ১০ ফেব্রুয়ারি টেডি ডে, ১১ ফেব্রুয়ারি প্রমিস ডে, ১২ ফেব্রুয়ারি হাগ ডে, ১৩ ফেব্রুয়ারি কিস ডে, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ সব দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। তাই এ সব দিনে বেশি ফুল বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
শাহবাগের নিউ ফুল তলা ফ্লাওয়ার শপে ঢুকতেই দেখা যায়- দোকানের সামনে বসে কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
বেচাকেনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দোকানের একজন কর্মচারী মো. সজিব বলেন, গত বছরগুলোতে ফেব্রুয়ারির শুরুতে আমাদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। কিন্তু এবার বসে বসে সময় কাটাচ্ছি। তবে রোজ ডে থেকে আমাদের বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার আগে প্রতিদিন ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করা যেতো। বড় অর্ডার আসলে আরও বেশি বিক্রি হতো। আর এখন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।’
ফাতেমা পুষ্পালয়ের মালিক মো. রকিব আহম্মেদ বলেন, ‘করোনার পর দোকান খুললে ভাবছিলাম ডিসেম্বর থেকে বেচাকেনা বাড়বে অথচ ডিসেম্বর গেল, জানুয়ারি গেল ফেব্রুয়ারিও চলে যাচ্ছে। অথচ এখনো আমাদের বেচাকেনা বাড়েনি। কর্মচারীদের বেতন, দোকান ভাড়া সব নিয়ে চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সামনের দিগুলোতে ব্যবসা কিছুটা বাড়তে পারে।’
এ ফুল ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাজারে কৃত্রিম ফুল এসে প্রাকৃতিক ফুলের চাহিদা কমে গেছে। এজন্য আমাদের বিক্রি কমে গেছে। নানা অনুষ্ঠানে কৃত্রিম ফুলের চাহিদা বাড়ায় আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।
জন্মদিন অনুষ্ঠানের জন্য রাজধানী ঝিগাতলা থেকে ফুল নিতে আসেন নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রায় এক বছর পরে ফুল নিতে এসেছি। করোনাকালে পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। তাই ফুল কিনতে আসা হয়নি। এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। এখন পারিবারিক অনুষ্ঠানের পরিধি বাড়ছে। তাই আজ ফুল কিনতে আসলাম।
এ প্রসঙ্গে শাহবাগ বটতলার ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ীর সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘করোনা পরে শাহবাগের সব ব্যবসায়ী ধারদেনা করে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন। এখন বেচাকেনা খুবই কম। প্রতিটি দোকানের মালিক ঋণের মধ্যে রয়েছে। কয়েকদিন আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আমাদেরকে এখানে এসে সব ব্যবসায়ীদের সরকারিভাবে পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। যদি এই সুবিধাটা করে দেয় তাহলে আমাদের অনেক উপকার হবে। তখন ব্যবসার জন্য আমরা সরকারিভাবে ঋণ নিতে পারবো, ফলে ব্যবসার পরিধি আরও বাড়বে।’