রাজশাহীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কমিটি নিয়ে ধারাবাহিক বিশৃঙ্খলার দায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন কারণ দর্শানোর এ নোটিশ দেন।
নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতালেব হোসেন, মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক মিফতাহুল জান্নাত বিভা ও সুমাইয়া আক্তার; যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদুজ্জামান রাজ এবং সদস্য শুয়াইব আহমেদ।
নোটিশে বলা হয়—গত কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে একটি রাজনৈতিক দলের কমিটিকে কেন্দ্র করে তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। তাঁদের আচরণ জনপরিসরে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং সাংগঠনিক আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন তাঁদের বিরুদ্ধে স্থায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না—তা লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদ বরাবর দপ্তরে জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহীর এনসিপিতে সাম্প্রতিক অস্থিরতার সূত্রপাত হয় গত ২৯ নভেম্বর জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। ঘোষিত কমিটিতে আগের সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করা হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ তাকে ‘আওয়ামী দোসর’ উল্লেখ করে এর প্রতিবাদে মাঠে নামেন। তারা এনসিপির মহানগর আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলীর অনুসারী হওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
সাইফুলকে বহিষ্কার না করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতালেব হোসেন গত শুক্রবার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে রাজশাহীতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। পরে তিনি আরেকটি স্ট্যাটাসে নিজের মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এর ঠিক পরের দিনই পাঁচ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমাইয়া আক্তার বলেন, “কিছুক্ষণ আগেই আমরা নোটিশটি পেয়েছি। আমাদের পরিবর্তে তাদেরই কারণ দর্শানো উচিত ছিল। এই শোকজ নিয়ে আমরা ভাবছি না।” জবাব দেবেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘আমরা জবাব দিতে চাই না। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে বসে আলাপ-আলোচনা করব। আলোচনা শেষে আমাদের করণীয় ঠিক করা হবে।’