যানজট নিরসনে রাজধানীর ২২টি মোড়ে দেশীয় প্রযুক্তির ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ প্রযুক্তি তৈরি করেছে। শিক্ষা ভবনসংলগ্ন মোড় থেকে ফার্মগেট-মহাখালী হয়ে উত্তরার আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কে এ বাতি স্থাপন করা হবে। এ ব্যবস্থা সনাতন (ম্যানুয়াল) পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ সংকেতবাতি (লাল, সবুজ ও হলুদ) জ্বলা-নেভার বিষয় সনাতন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে এ পদ্ধতি স্বয়ংক্রিয়তার (অটোমেশন) দিকে উন্নীত করা হবে।
বুয়েট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশে অতীতে ইউরোপ কিংবা অন্যান্য দেশের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ওসব প্রযুক্তির জটিলতার কারণে কোনো পদ্ধতিই সফলভাবে প্রয়োগ করা যায়নি। আর এটা হয়েছে এদেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা, সড়ক ব্যবহারকারী কোনোটাই উন্নত বিশ্বের সঙ্গে মিল নেই। সূত্র জানায়, যানজট নিরসনে দেশে খুবই উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো সহায়ক বা বিকল্প (ব্যাকআপ সাপোর্ট ) ব্যবস্থা নেই। অথচ ২৪ ঘণ্টাই ট্রাফিক সিগন্যাল প্রয়োজন হয়। এক ঘণ্টার জন্যও ওই ব্যবস্থা ব্যাহত হলে পুরো ব্যবস্থাপনাই অকার্যকর হয়ে যায়।
এ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাকআপ সাপোর্ট রাখতেই দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সিগন্যাল বাতিগুলো শিক্ষা ভবন মোড়, কদম ফোয়ারা ও মৎস্য ভবন মোড়, শাহবাগ মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মিন্টো রোডের মোড়ে বসানো হবে। পরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর হয়ে আবদুল্লাহপুর মোড় পর্যন্ত এসব ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানো হবে।
বুয়েট থেকে তৈরি এই ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা যানজট নিরসনের ৮০-৯০ শতাংশ মেটাতে পারবে। বুয়েটের ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা থেকে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার যানজট পরিস্থিতির উন্নয়নে অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বুয়েটের দুজন পরিবহন বিশেষজ্ঞের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন) যমুনায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা ঢাকার যানজট নিরসনে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছিলেন।
এফএনএস