মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় আলী আজম মানিক (৩৩) নামে এক ব্যবসায়ীকে দোকানে ঢুকে দাঁড়ি ধরে মারধরের অভিযোগ উঠেছে নাসিম ভূঁইয়া (৪৫) নামে একজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।সোমবার (২৩ জুন) রাত ৯ টার দিকে ঘিওর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলী আজম মানিক ‘মানিক কম্পিউটার’ নামে একটি দোকান পরিচালনা করেন। ঘটনার পর তিনি ঘিওর থানায় নাসিম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ পত্রে আলী আজম মানিক উল্লেখ করেন, ‘নাসিম ভূঁইয়া প্রায়ই আমার দোকানে কাজ করাতে এসে বিল না দিয়ে চলে যেতেন। টাকা চাইলে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতেন এবং একাধিকবার টাকা দাবি করতেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, তাকে টাকা না দিলে ঘিওর বাজারে ব্যবসা করতে দেবেন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘২৩ জুন রাত ৯টার দিকে তিনি আবার দোকানে এসে জরুরি কাজ করানোর কথা বলেন। আমি তখন অন্য এক কাস্টমারের কাজে ব্যস্ত ছিলাম, তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দাড়ি ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন, অকথ্য গালিগালাজ করেন এবং এরপর এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও থাপ্পড় মারেন। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয় এবং দাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা পাই।’ আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও কাস্টমাররা এগিয়ে এলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এখানে আমাকে ব্যবসা করতে দেবেন না এবং হাত-পা ভেঙে দেবেন। হামলার সময় তিনি একটি মনিটর ভেঙে ফেলেন যার দাম প্রায় ১৫ হাজার টাকা। পরে স্থানীয়রা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, মানিকগঞ্জ জেলা শাখার নেতা মাওলানা মুহাম্মদ রমজান মাহমুদ বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি উত্তেজিতভাবে দোকানে প্রবেশ করে আলী আজম মানিকের দাড়ি ধরে তাকে আঘাত করছেন। এটি একটি ঘৃণ্য ও অন্যায় আচরণ। নবিজি (সা.)-এর সুন্নত দাড়ি ধরে টান দেওয়ার কোনো অধিকার কারো নেই। এটি শুধু ব্যক্তি মানিকের নয়, বরং পুরো ধর্মপ্রাণ সমাজের আত্মমর্যাদায় আঘাত।’ আমরা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের দুঃসাহস দেখানোর সাহস না পায়। যদি দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা না হয়, তাহলে আলেম সমাজ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাসিম ভূঁইয়ার ফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কোহিনুর মিয়া বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সূত্র:খবরের কাগজ