চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের ছোট দারোগারহাট এলাকায় যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা এক কর্মী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিনজন।
নিহত কলিমুদ্দিন (৩২) ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ ফেদাইনগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবু নাছেরের ছেলে। আহতরা হলেন, মো. সাদ্দাম (২৮) মো. সেলিম (৪২) ও শাখাওয়াত (৩৬)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার ২৮ মে রাত ৮টায় উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের ছোট দারোগারহাট গরুর বাজার নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন মাসুম, যুবদল নেতা ইসমাইল হোসেন, যুবদল নেতা আবু সালেকসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় স্থানীয় যুবদল কর্মী আপেল অপর যুবদল কর্মী সাখাওয়াতের মাদকসহ নানান অপকর্মের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সাখাওয়াত আপেলকে মারধর করে৷ পরবর্তীতে আপেলের সমর্থিত যুবদলের নেতাকর্মীরা হামলার ঘটনার প্রতিবাদ করলে সাখাওয়াত তার দলবল তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এক পর্যায়ে সাখাওয়াত ওরফে সাকা কলিমুদ্দিনকে পেটে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত যুবদল কর্মী কলিমুদ্দিন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম চৌধুরী শরীফের অনুসারী। আর সাখাওয়াত হোসেন সাকা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের অনুসারী বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অহিদুল ইসলাম শরীফ আমার দেশকে বলেন, সাখাওয়াত দীর্ঘ বছর প্রবাসে ছিলেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশে ফিরে আসে। বিগত আওয়ামী লীগের আমলে যারা মাদক বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল তারা বর্তমানে সাখাওয়াতের ছত্রছায়ায় এলাকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান সহস্রধারা ঝরণাসহ পুরো এলাকাকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করেছে। তার নেতৃত্বে ওই এলাকায় ইয়াবার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ইসমাঈল হোসেন আমার দেশকে বলেন, এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ছোট দারোগারহাট বাজারে একটি বৈঠক ছিল। সাবেক যুবদল নেতা সেলিমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন ছেলে দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল ফাটিয়ে আমিসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আমার পাশে থাকা সাখাওয়াতের উপর হামলা করে। সাখাওয়াত মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত বলে ইতিপূর্বে আমিও তাকে এসব থেকে সরে আসতে কয়েক দফায় সতর্ক করেছি।সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদর তারা কেউই দলের কর্মী নয় বলে দাবি করেছেন।
নিহত আলিমুদ্দিনের বড় ভাই তসলিম উদ্দিন বলেন, কলিমুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে শাখাওয়াতের ইয়াবা ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে। আমার ছোট ভাই এলাকায় যেকোন অপকর্মের বিরুদ্ধে সবসময় স্বোচ্চার ছিলো। এজন্য তাকে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, বারৈয়াঢাল ইউনিয়নে বিভিন্ন বিষয়ের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ১ জন নিহত এবং অপর ৩ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র: আমার দেশ।