পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মা-বোনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পৌর শহরের কালিবাড়ী মহল্লার একটি বিরোধপূর্ণ জায়গায় বাড়ি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পৌর বিএনপির ৬ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ করেছেন মাকসুদা পারভীন নামের এক নারী। অভিযোগে- পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোতালেব হোসেনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। গত ২০ মে সন্ধ্যায় ভাঙ্গুড়া থানায় চাঁদাবাজির এই অভিযোগ করা হয় । এর আগে এদিন সকালে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার বাড়ি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
অভিযোগকারী ওই নারীর দাবি, নিজের জায়গায় ঘর নির্মাণ কাজ আরম্ভ করলেও বিএনপি নেতারা তার কাছে ৭০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় অভিযুক্তরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। অপরদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, ওই নারীর কাছ থেকে তারা কোন চাঁদা দাবি করেননি। মা-বোনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পৌর প্রশাসক ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
জানা গেছে, পৌর শহরের কালিবাড়ী এলাকায় বিরোধপূর্ণ একটি জায়গায় বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেন স্থানীয় আশরাফুল আলম আরিফ নামের এক ব্যক্তি । বিষয়টির সমাধান চেয়ে তার মা ও চার বোন পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম এর শরনাপন্ন হন । কিন্তু তাতে কোন কাজ না হওয়ায় গত ৫ মে ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন তারা। এরই প্রেক্ষিতে পৌর প্রশাসক গত ২০ মে সকালে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। এ্ই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারী পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম ,সাংগঠনিক সম্পাদক মোতালেব হোসেন এবং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মানিক হোসেনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ দেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, নিজের জায়গায় বাড়ি নির্মাণ শুরুর পর থেকেই বিএনপি নেতারা আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করতে থাকে। প্রথমে ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়।পরে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তারা। টাকা না পাওয়ায় নেতারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মানিক হোসেন বলেন, আরিফ আমার চাচা। তার সাথে আমার খুবই ঘনিষ্ট সম্পর্ক । আরিফ তার বোনদের ম্যানেজ করতে আমাকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিল। এখন সে এই টাকা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন।এটা খুবই দুঃখজনক।
আরিফের বোন সালমা খাতুন বলেন, আমার ভাই আরিফ আমাদের যৌথ মালিকানাধীন জায়গায় বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য আমরা পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামকে জানাই। কিন্তু তাতে কোন কাজ না হওয়ায় পৌর প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করি। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে পৌর বিএনপি সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই নারী আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ,বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নির্মাণাধীন জায়গা নিয়ে তাদের ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ থাকায় পৌর কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখানে আমাদের কোন হাত নেই। এলাকায় বিএনপিকে বিতর্কিত করতেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. খোরশেদ আলম বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পৌর প্রশাসক বিরোধপূর্ণ জায়গাটিতে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আরিফ তার বোনদের ম্যানেজ করতে মানিককে টাকাটা দিয়েছিলেন। বিষয়টি তাদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি বলে আমার মনে হচ্ছে। তারপরও অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে।