1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

গুম করলে দেওয়া হতো পুরস্কার, কমিশনের প্রতিবেদন

ডিডিএন ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫
  • ২৪ সময় দর্শন

গুম কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- গুমের ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। বাংলাদেশে গুমের সঙ্গে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার জড়িত থাকার প্রমাণও পেয়েছে কমিশন। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বুধবার (৪ জুন) দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেয় গুম কমিশন। সোমবার (২৩ জুন) এর ষষ্ঠ অধ্যায় গণমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে যেসব সদস্য গুম, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা কিংবা প্রতিষ্ঠানগত জবাবদিহিতার মতো বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বা ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন, তাদেরকে প্রায়শই ব্যক্তিগত ও পেশাগতভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

অন্যদিকে, কমিশন সাতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুমসহ গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। আর এই গুমের ঘটনাগুলো স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, এগুলো একক ব্যক্তির বিচ্ছিন্ন কাজ ছিল না। বরং প্রতিটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইউনিটের একাধিক সদস্যের অংশগ্রহণ ছিল, যা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অজান্তে হওয়া প্রায় অসম্ভব। এসব ইউনিটে গোয়েন্দা সংস্থার নিজস্ব সদস্যরা নিয়মিতভাবে নিযুক্ত থাকতেন, যাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছিল সহকর্মীদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে ঊর্ধ্বতনদের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া। তাসত্ত্বেও, সংশ্লিষ্ট সময়কালে অপরাধের মাত্রা ছিল ব্যাপক ও বহুলচর্চিত। অথচ, পর্যালোচনা করা কোনো ফাইলেই ‘গুম’ শব্দটি উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি। মনে হয় যেন এই সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা কখনও এমন কোনো অপরাধে জড়িতই হননি।

এতে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অনেকের সঙ্গে আলোচনায় দেখা গেছে তারা গভীরভাবে ভীত। তবে তাদের ভয় কমিশন বা এর জবাবদিহিতার ম্যান্ডেটের প্রতি না। বরং, ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় অনেকেই স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাদের ভয় নিজেদের প্রতিষ্ঠান থেকেই। অনেকে প্রতিশোধের ভয় পাচ্ছেন, এমনকি প্রাণনাশের আশঙ্কাও করছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার আশঙ্কা রয়েছে এমন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে রাখা বা রক্ষা করার ফলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির সৃষ্টি হয়, যা সব বাহিনীর জন্য বিবেচ্য। যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তারা ভবিষ্যতে নিজের অপরাধ ফাঁস আড়াল করতে গিয়ে অনুমোদনহীন ও ক্ষতিকর পদক্ষেপ নিতে পারেন। এর ফলে তাদের অবস্থান, গোপনীয়তা বা উদ্বেগের সুযোগ নিয়ে তাদের অজান্তেই শত্রুপক্ষের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এতে শুধু ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা ও সততার প্রশ্ন ওঠে না, স্পষ্টতই জাতীয় নিরাপত্তাও বিপন্ন হতে পারে।

ক্ষমতায় থাকাকালীন, আওয়ামী লীগ একদিকে যেমন নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তেমনি অন্যদিকে একটি রাজনৈতিক বয়ান গড়ে তোলে, যেখানে দলটি নিজেকে বাংলাদেশে ইসলামপন্থি চরমপন্থার উত্থানের বিরুদ্ধে একমাত্র কার্যকর প্রতিরক্ষাকবচ হিসেবে উপস্থাপন করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের দেশীয় সন্ত্রাসবিরোধী বয়ানটি ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়েছে। এই সম্পর্ক কেবল মৌখিক কথায় সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি যৌথ অভিযানে, আন্তঃসীমান্ত সমন্বয়ে এবং আইনবহির্ভূত কার্যক্রমেও রূপ নেয়। একাধিক সাক্ষ্যে ভুক্তভোগীরা বর্ণনা করেছেন, কীভাবে তাদের ভারতের হেফাজত থেকে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে কিংবা বাংলাদেশের হেফাজত থেকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্কের পাশাপাশি, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে ‘সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই’-এর নামে পশ্চিমা সহযোগিতা থেকেও লাভবান হয়েছে।

এর আগে ১৯ জুন রাজধানীর গুলশানে একটি সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা গুমের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাদের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ সেটি আমাদের জুরিসডিকশনের বাইরে। তবে বাংলাদেশে যাদের সম্পৃক্ততা পাচ্ছি, তাদের বিষয়ে মামলা করার জন্য পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও ৫-৬টি মামলার কার্যক্রম চলছে।’

সূত্র: ইনকিলাব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host