দেশে দ্রুত বাড়তে থাকা করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে অবিলম্বে বইমেলা, সামাজিক অনুষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্রসহ যে কোনো ধরনের সমাবেশ বন্ধে সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সবক্ষেত্রেই কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দেয় তারা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, চলছে বইমেলা। বন্ধ হয়নি সামাজিক আচার অনুষ্ঠানও।
হাটবাজার, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চলছে আগের মতোই। কোথাও বালাই নেই স্বাস্থ্যবিধির। পর্যাপ্ত গাড়ির ব্যবস্থা না করেই অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনায় ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।
এ নিয়ে রাজধানীতে ভোগান্তিতে পড়া মানুষের চলছে বিক্ষোভ।
এদিকে, দেশে এক দিনে সর্বাধিক করোনা রোগী শনাক্তের আগের দিনের রেকর্ডটিও ভেঙে গেছে গত ২৪ ঘণ্টায়। গত এক দিনে ৬ হাজার ৮৩০ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৩৬১ জন বেশি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এটাই এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৫০ জনের।
করোনাভাইরাস বাড়তে থাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত সোমবার (২৯ মার্চ) একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
সরকারি ওই নির্দেশনায় জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি, বেসরকারি অফিস, শিল্প কারখানা ৫০ ভাগ জনবল দিয়ে পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর গর্ভবতী, অসুস্থ ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের বাড়িতে অবস্থান করে কাজ করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল রবিবার (৪ এপ্রিল) থেকে সরকারি সব দপ্তরে অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বেশকিছু মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গতকাল শুক্রবার (২ এপ্রিল) রাতে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন জানান, করোনা মহামারি আবারও বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আগের মতো কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে রোস্টার তৈরি করেছি। সেই অনুযায়ী অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা নির্দেশনার প্রতিটি বিষয় মেনে অফিস কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
অন্য সব মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে হারুন বলেন, অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করা সব সরকারি দপ্তরের জন্য বাধ্যতামূলক। ইতোমধ্যে অধিকাংশ সরকারি দপ্তর রোস্টার তৈরি করে অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম শুরু করেছে।
যারা (যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ) এখনো দায়িত্ব বণ্টন করে রোস্টার তৈরি করতে পারেননি তারা রবিবার (৪ এপ্রিল) থেকে অবশ্যই তা পালন করবেন। কারণ এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা।