অনলাইন ডেস্ক: নেতাই নদীতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু সেতুভাগ্য জুটছে না গ্রামবাসীর। বর্ষায় পানির তোড়ে ভেঙে যায় সাঁকো। এলাকাবাসীর উদ্যোগে পুনরায় সাঁকো নির্মাণ হয়। বছরক্রমিক ব্যাপক দুর্ভোগ নিয়ে নেতাই নদী পারাপার হচ্ছেন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষ।
উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও- এ দুই ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের মানুষকে নদী পার হয়ে বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। স্বাধীনতার আগ থেকে নদী পারাপারে মানুষের ভরসা ছিল নৌকা। বাঁশের অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করে চলাচলের কিছুটা সহজ পথ তৈরি করতে চাইলেও প্রতি বর্ষায় সাঁকো ভেঙে বিলীন হয়। ফের নতুন করে সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হয় গ্রামবাসীকে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাইজপাড়া ইউনিয়নের ২৭টি ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের ২০টিসহ ৫০টি গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকোটি। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় নদী পার হয়ে উপজেলা সদরে যেতে হয় মানুষকে। নদী পার হয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় পাঠ নিতে ছোটে শিক্ষার্থীরা।
কালিকাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস বলেন, সেতুর অভাবে রোগীদের পড়তে হয় সবচেয়ে দুর্ভোগে। কৃষকও বঞ্চিত হচ্ছেন তার ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে। ১৯৯২ সাল থেকে এলাকাবাসী নেতাই নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। জনপ্রতিনিধিরা বারবার আশ্বাসও দিয়েছেন। আজও আলোর মুখ দেখেনি একটি সেতু। সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি তাদের।
দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বলেন, শুধু আশ্বাসেই আটকে আছে সেতু। সবাই বলে সেতু হবে, কিন্তু হচ্ছে না। আশ্বাস পেতে পেতে মানুষ এখন বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। অনেকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেও সেতু হচ্ছে না। তিনি বলেন, একটি সাঁকো দিয়ে অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ চলাচল করতে হচ্ছে। স্বাধীনতার আগে থেকে মানুষের এমন দুর্ভোগ চলছে। কিন্তু ভাগ্যে সেতু জুটছে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহীনুর ফেরদৌস বলেন, নেতাই নদীতে প্রায় ১৫০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। একনেকে অনুমোদন দিলেই সেতুর জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে। সেতুটি হলে মানুষে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগে লাঘব হবে।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিকুজ্জামান বলেন, মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।