শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৮ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

উলঙ্গ করে ছবি তুলে প্রতারণা করতেন রোমানা

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ১৫ মার্চ, ২০২১

নিত্যনতুন প্রতারণার মাধ্যমে সৌদিপ্রবাসী কামরুল হাসানকে বিয়ে করে তার কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছিলেন মডেল রোমানা ইসলাম স্বর্ণা। ফ্ল্যাট ও গাড়ি ক্রয় এবং ব্যবসার কথা বলে দফায় দফায় নেওয়া অর্থ আত্মসাৎ শেষে ওই প্রবাসীকে তালাক দেন এই অভিনেত্রী।

ব্ল্যাকমেইল করে কামরুল হাসান (৪৫) নামের সৌদিপ্রবাসী ব্যবসায়ীকে বিয়ে করার পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণার (৪১) জীবনযাপন। চলাফেরায় আসে চাকচিক্য। শুরু হয় বিলাসী জীবন। আর এসব হয় কামরুলের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ দিয়েই। বিয়ের আগে ও পরে ওই প্রবাসীর কাছ থেকে মডেল রোমানা প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে ‘ভালো যোগাযোগ’-এর ক্ষমতা দেখিয়ে কামরুল হাসানকে হুমকি দেন রোমানা। সর্বশেষ তিনি আইনের দ্বারস্থ হলে গ্রেপ্তার হন রোমানা। এর পর থেকে তার বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অভিযোগ আসা শুরু হয়েছে পুলিশের কাছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় তাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল। পুলিশ বলছে, রোমানা স্বর্ণা একাই নয়, এরা একটি প্রতারক চক্র। সম্মিলিতভাবে এই চক্র প্রতারণা করে আসছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কামরুলের টাকায় কেনা গাড়ি দেখতে তাকে একদিন বাসায় ডাকেন রোমানা।  এরপর  ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে আপ্যায়নের নামে দেয়া খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে উলঙ্গ ও অর্ধ-উলঙ্গ ছবি তুলে ছবি তোলে রোমানা ও তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর ধর্ষণ মামলার হুমকি ও সামাজিক মর্যাদা নষ্টের ভয় দেখিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয় প্রবাসী কামরুলকে। স্ট্যাম্পে নেওয়া হয় স্বাক্ষর। নিকাহনামায় নিজেকে বিধবা হিসেবে উল্লেখ করেন রোমানা।

ভুক্তভোগী কামরুল জানান, বিয়ের পর তার জীবনটা বিষিয়ে ওঠে। ১০ লাখ টাকা দেনমোহরের পাশাপাশি নেওয়া হয় ৩৩ ভরি স্বর্ণ। এরপর তার চাহিদা বাড়তেই থাকে। কেনেন চার লাখ টাকা মূল্যের একটি ঘড়ি, দুটি নতুন মডেলের আইফোনসহ বিভিন্ন পণ্য।

তিনি আরো জানান, ২০১৯ সালের মার্চে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর কামরুল সৌদি আরব চলে যান। সম্প্রতি তিনি দেশে আসেন। স্বর্ণাকে ফোন করলে রিসিভ করছিলেন না স্বর্ণা।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে স্বর্ণার বাসায় যান তিনি। তখন সে বাসায় ফেরেনি। রাত ২টা ৪০ মিনিটে বাসায় ফিরলে স্বর্ণা জানিয়ে দেয়, তাকে অনেক আগেই সে তালাক দিয়েছে। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় তাকে। এর আগে রোমানার আরো দুটি বিয়ে হয়েছে বলে জানান কামরুল।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার স্বর্ণার বিরুদ্ধে কামরুল মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। সন্ধ্যায় লালমাটিয়া ডি-ব্লক-এর একটি বাসা থেকে স্বর্ণাকে গ্রেপ্তার করা হয়।