রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

উল্লাপাড়ায় করোনাকালের কোরবানী : ৩২ হাজার পশু প্রস্তুত

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

উল্লাপাড়া(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ ঈদ আসে ঈদ চলে যায়, ঈদ হাসতে শেখায়, ভালবাসতে শেখায়, ত্যাগের মহিমা শেখা। করোনাকালের মধ্যেই আর মাত্র কয়েকদিন পরই ঈদ উল আযহা যা কোরবানীর ঈদ হিসেবে সমাদৃত। কোরবানীকে সামনে রেখে বুকভরা আশা নিয়ে যারা খামারে ও বাড়িতে ষাঁড় গরু লালন পালন করেছেন, তাদের ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে তা বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে এই মুহুর্তে। কোরবানীর হাটগুলো এখনো জমে ওঠেনি। হাটে আগমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না পাইকারদের । এদিকে করোনাকালে মানুষের আয় কমে গেছে। দেশের বেশীভাগ লোকদের হাতে টাকা নেই। অনেকেই কোরবানী দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। গত বছর যে টাকায় কোরবানী পশু কিনেছেন এবছর তার অর্ধেক দামেও অনেকে পশু কিনতে পারবেন না। অর্থাৎ কোরবানী করার মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ জেলার উল­াপাড়া উপজেলার নাগরৌহা, পংরৌহা, বাঁখুয়া, মোহনপুর, কালিয়াকেড়, রাজমান, পূর্ণিমাগাতী, বোয়ালিয়া, চৌবিলা, বাঙ্গালা, সলপ, খালিয়াপাড়া,অলিপুর, আমডাঙ্গা,পাঙ্গাসী, হাওড়া,গয়হাট্টাসহ ৫০টির বেশী গ্রামে রয়েছে নানা ধরণের ষাঁড় গরুর খামার । উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে , উপজেলায় ৮ হাজার ১শ’ ৮১টি ষাঁড় গরু পালনের খামার রয়েছে। এ সকল খামারে ৩২ হাজার ৪শ’ ৬৫টি দেশী বিদেশী জাতের ষাঁড় গরু গত ১ বছর ধরে পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে এ সকল ষাঁড় গরু কোরবানী হাটে তুলে বিক্রির জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

উল­াপাড়ার গ্যাস লাইন, বোয়ালিয়া,বড়হর, সলঙ্গা,কয়ড়া, জনতা পশুর হাটগুলোর ইজারাগণ মিডিয়া কর্মীদের জানিয়েছেন, হাটের পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা তারা নিয়েছেন। তবুও হাটে পশু বিক্রি জমে ওঠবে কি না ? তা নিয়ে হতাশা ও সংশয় রয়েছে।

উপজেলার খালিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, তিনি উল­াপাড়া পৌর শহরের এক স্টেশনারী ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি গ্রামের বাড়িতে একটি ছোট আকারের খামার আছে তার । খামারে কোরবানী উপলক্ষে প্রতিবছর ষাঁড় গরু পালন করে থাকেন। তিনি জানান, গত বছর তিনি ১৫টি গরু পালন করে ৫ লক্ষ টাকা লাভ করেছিলেন। এ বছর ১০ টি পালন করেছেন। করোনার কারণে উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে না পারলে মোটা টাকার লোকশান গুনতে হবে।

শ্রীকোলা গ্রামের হাসানুর রহমান তিনি একটি বেসরকারি কলেজে চাকুরী করেন। পরিবারের লোকজন মিলে ৫টি গরু,দেশী পালন করেছেন। আশা করছেন কোরবানীর হাটে কাংখিত দামে বিক্রি করতে পারলে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা লাভের মূখ দেখতে পারবেন। কি আছে কপালে তা আল­াহ জানেন। বাঁখুয়া গ্রামের সামাউন আলী জানান, এ গ্রামে ১২টি পরিবার ১টি/২টি করে গরু পালন করেছেন লাভের আশায় । লাভ হবে কিনা হাটে গরু বিক্রি করতে পারা যাবে কিনা বলা যাচ্ছে না। তিনি আরো জানান, এ বছর গো খাদ্যের দাম বেশী। এজন্য গরু পালনের খরচও পড়েছে বেশী। গরু ব্যবসায়ী রমজান আলী ও পশুর হাটের বোকার (দালাল) বশির উদ্দিন জানান, করোনাকালিন পরিস্থিতি ছাড়াও যদি ভারত থেকে চোরাপথে এ দেশে গরু আসে তবে পরিস্থিতি হবে আরো ভয়াবহ। বুকভরা আশা নিয়ে যে সকল খামারী, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের লোকজন কোরবানীকে সামনে রেখে গরু পালন করেছেন তাদের সর্বনাশ হবে। কোরবারী হাটগুলো জমবে কিনা ? হাটে পাইকার আসবে কি না । গরু পালনকারীগণ হাটে গরুগুলো উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে পারবেন কি না ? তাদের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করবে হবে আরো কয়েকদিন।