রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নারায়ণগঞ্জে পোশাক চুরি চক্রের ৮ সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর বিসিক শিল্পনগরী থেকে রফতানিমুখী পোশাক চুরি ও পাচারকারী চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রিমিয়াম বেভারেজ ফুড অ্যান্ড ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেড কারখানায় অভিযান চালিয়ে পোশাক পাচারের চেষ্টার সময় তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় কোটি টাকা মূল্যের রফতানিযোগ্য চোরাই পোশাকভর্তি একটি কাভার্ডভ্যান।

র‌্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পরিচালক জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রায় সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার মালামালভর্তি গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে এগুলো অবৈধভাবে পাচার করে থাকে। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা দল গত এক মাস ধরে চক্রটির ওপর নজরদারি করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোরে র‌্যাব জানতে পারে কাঁচপুর বিসিক থেকে বিপুল পরিমাণ রফতানিযোগ্য তৈরি পোশাকের একটি কাভার্ডভ্যান লুট ও পাচারের কাজ চলছে।

পরে র‌্যাব সেখানে অভিযান চালিয়ে চক্রটির আট সদস্যকে গ্রেফতারসহ কোটি টাকার পোশাকভর্তি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে। তবে র‌্যাবের অভিযানের সময় এই চক্রের আরো সাত থেকে আট সদস্য পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- লিটন, দুলাল, লোকমান চৌকিদার, আলাউদ্দিন, শাকিল, মোস্তফা, মিনহাজ আহম্মেদ ও রুবেল। এই চক্রের মূলহোতা মিজান ও সোহাগসহ অধিকাংশ ব্যক্তির বাড়ি ভোলা জেলায়। অন্যরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বাসিন্দা।

উদ্ধারকৃত পণ্যের মালিক ও কর্তৃপক্ষ জানান, সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার অপটিমাম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড কারখানায় উৎপাদিত পোশাক ভর্তি কাভার্ডভ্যানটি বিদেশে শিপমেন্টের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। যাত্রাপথে কাভার্ডভ্যানের চালক ও হেলপারের যোগসাজশে কাঁচপুর বিসিক এলাকায় প্রিমিয়াম বেভারেজ ফুড অ্যান্ড ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেড কারখানার ভেতর কাভার্ডভ্যানটি ঢুকিয়ে সেখানকার কিছু অসাধু কর্মচারীসহ সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র চুরির চেষ্টা করেছিল বলে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।

চোর চক্র রফতানিজাত পোশাক ভর্তি কাভার্ডভ্যান তাদের সুবিধামতো স্থানে নিয়ে শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত করা পোশাকভর্তি কার্টন খুলে অভিনব কায়দায় প্রতিটি কার্টন থেকে ১০ থেকে ২০টি করে পোশাক চুরি করে আত্মসাৎ করে আসছে। তাদের এ সকল চুরির ফলে গার্মেন্টস মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো এবং চাহিদা ও অর্ডার অনুযায়ী শিপমেন্ট দিতে না পারায় বিদেশি ক্রেতাদের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতো। চক্রটির সাথে প্রিমিয়াম বেভারেজ ফুড অ্যান্ড ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেড নামের কারখানার কিছু অসৎ কর্মচারী ও পরিবহন চালক হেলপার জড়িত রয়েছে বলেও জানান পণ্যের মালিক আবেদ আলী শরীফ।

দুপুর সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীনসহ জড়িত অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

এ ছাড়া পোশাক চুরি ও পাচারকারী চক্রটিকে স্থানীয় কারা মদদ দিচ্ছে সে বিষয়টিও র‌্যাব খতিয়ে দেখছে।