রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

পাবনায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগ

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০

পাবনা প্রতিনিধি:পাবনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)’র অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্ণীতি ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।নির্ভরযোগ্য তথ্য সুত্রে জানা যায়, (টিটিসি) পাবনা’র অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলাম বিগত মার্চ ২০২০ খ্রি. চাকুরিতে যোগদান করেন। সে সময় প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বিশ্বব্যাপী মহামারি রুপ ধারণ করে। বাংলাদেশেও এর বিস্তার ক্রমান্তয়ে বাড়তে থাকে। সরকারি নির্দেশনায় প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ কর্মস্থলে থাকার কথা বলা হলেও তখন থেকেই তিনি নিজের ইচ্ছে ও খেয়ালখুশি অনুযায়ী পাবনায় মাঝে মাঝে অফিস করেন এবং ঢাকায় থাকেন। সপ্তাহের শেষে বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি পাবনা ত্যাগ করেন এবং শনিবারসহ ক্ষেত্র বিশেষে রবিবারেও তিনি পাবনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুপস্থিত থাকেন। দিন গড়াতে থাকে তার অনুপস্থিতির মাত্রা ক্রমেই বাড়তে থাকে। অফিসে এমন অনুপস্থিত থাকার কারণে নীতি নির্ধারণ কাজে সব ট্রেড্রের ইন্সট্রাক্টরদের অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তিনি অফিস প্রধান হওয়ায় তাকে অন্য কেউ দেখার না থাকার কারণে ক্রমান্বয়ে তার অফিসে অনুপস্থিতি বাড়তে থাকে।

 

সরকারি বিধি মোতাবেক তার কোয়ার্টারে থাকার কথা থাকলেও তিনি নিয়ম ভঙ্গ করে একাডেমিক ভবনে অবস্থান করেন। যা কখনও কোনভাবেই কাম্য নয়। লক্ষনীয় বিষয় হলো একাডেমিক ভবনে মধ্যপ্রাচ্য প্রেরণের জন্য হাউজ কিপিং এর মেয়ে প্রশিক্ষানার্থীদের তৃতীয় তলায় আবাসিক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এদিকে অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলামের স্ত্রী আমেরিকা প্রবাসী। সেই সুযোগ নিয়ে তিনি কোয়ার্টারে না থেকে কি কারণে হাউজ কিপিং এর মেয়েদের পাশে থাকেন বিষয়টি সকলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাছাড়া অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম নিজের কোয়ার্টার ছেলে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাড়া দিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থও আদায় করেন।

 

অন্যদিকে (টিটিসি) পাবনা কম্পিউটার ট্রেড্রের সিআই অমল কুমার দাস অধ্যক্ষের অবর্তমানে দায়িত্ব পালন করেন যার কোন অফিসিয়াল চিঠি বা বৈধতা নেই। সেই সুযোগে অমল কুমার ফ্রি থাকা সত্বেও সেফ প্রকল্পের ভর্তি ফরম বিক্রয় পূর্বক অনৈতিকভাবে ৫০টাকা করে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায় করছেন। অথচ সরকার বেকারত্ব দূরিকরণে দারিদ্র, বিধবা, ও অল্প শিক্ষিত ব্যাক্তিদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষে সম্পূর্ণ ফ্রি এবং বৃত্তিমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। আবার যাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে গেছে সদনপত্র বিতরণের সময় সেই সকল শিক্ষার্থদের নিকট থেকে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে অবৈধভাবে আদায় করছেন।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে বলেন আমরা সব জানি বুঝি কিন্তু এসব কথা বললে আমাদের চাকরি থাকবে না। টিটিসি পাবনা’র অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলাম এবং সিআই অমল কুমার দাস যোগসাজেসে সে সকল অনিয়ম, দূর্ণীতি ও সেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছে সেগুলো আমাদের ব্যথিত করে।

 

এ ব্যাপারে সরেজমিনে টিটিসি পাবনা’র অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলামের সাথে কথা বলতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে অনুপস্থিত আছি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে এসেছি অমল কুমার দাস কে আপনারা তার সঙ্গে কথা বলেন। এর আগেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন এ বিষয় জানতে চাইলে কোন সদত্তোর দিতে পারেনি অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম।

 

টিটিসি পাবনা’র কম্পিউটার ট্রেড্রের সিআই অমল কুমার দাসের কাছে অধ্যক্ষের অনুপস্থিতির চিঠি চাইলে তিনি দেখাতে পারেনি। একাডেমিক ভবনে অধ্যক্ষের অবস্থান করা, শিক্ষার্থীদের নিকট কোয়াটার ভাড়া দেওয়া এবং টাকা নিয়ে ভর্তি ফরম ও সনদপত্র বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন না।

সচেতন মহল মনে করছেন, এমন অনিয়ম, দূর্ণীতি ও সেচ্ছাচারিতা চলতে থাকলে পাবনা টিটিসি’র ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। শিক্ষার্থীদের তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জন থেকে বঞ্চিত করা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুদৃষ্টি কামনা করছেন।