অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, দেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এবং নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন স্থগিত করায় আওয়ামী লীগ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “নির্বাচন নির্ধারিত সময়সূচি অনুসারেই ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক এবং এতে বিপুল সংখ্যক ভোটার উপস্থিত থাকবে।”
বিগত ১৬ বছরের স্বৈরশাসনকালে তিনটি কারচুপিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ায় এবার প্রথমবারের মতো কোটি কোটি তরুণ ভোট দিতে পারবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সূচনা হিসেবে কাজ করবে। যা গত বছরের জুলাই ও আগস্টে হওয়া গণ-অভ্যুত্থানে লাখো মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।”
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বের জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান এবং জুলাই সনদকে ঘিরে ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চলমান সংলাপের প্রশংসা করেন মন্ত্রী চ্যাপম্যান।
যুক্তরাজ্যের আশ্রয় ব্যবস্থা অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চ্যাপম্যান, যা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের মাধ্যমে ঘটছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসনের গুরুত্ব এবং শোষণ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এ সময় একমত পোষণ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে এবং আরও বেশি বাংলাদেশিকে বৈধ উপায়ে বিদেশে যেতে উৎসাহিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’উভয়ে রোহিঙ্গা সংকট এবং বাংলাদেশে বসবাসরত ১০ লক্ষাধিক শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজন নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তরুণরা কোনো আশা ছাড়া বড় হচ্ছে। তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’
বৈঠকে ঢাকা-লন্ডনের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা আরও বাড়ানোর সুযোগ নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক গবেষণার জন্য বাংলাদেশ একটি ব্রিটিশ গবেষণা জাহাজ কিনছে।
মন্ত্রী চ্যাপম্যান দুদেশের মধ্যে বিমান পরিবহন সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।’
বৈঠকে তারা নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন-আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন রোধ, বাণিজ্য বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা সংকট, এবং বিমান ও সমুদ্র পরিবহন খাতে সহযোগিতা জোরদারসহ অন্যান্য ইস্যু।
সূত্র: এফএনএস।