শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ভাঙ্গুড়ায় সালিশের টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ: প্রতিবাদে আ.লীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩

মানিক হোসেন, ভাঙ্গুড়া: আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকসহ অনলাইন- মিডিয়ায়) সালিশের টাকা আত্মসাত চেষ্টার মিথ্যা অভিযোগ প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমণিষা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক  আলহাজ আব্দুল ওয়াহেদ।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে ঝবঝবিয়া গ্রামে তার বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘একটি সালিশি বৈঠককে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে আমার নামে অর্থ আত্নসাতের অপপ্রচার চালাচ্ছে একই গ্রামের বিএনপি সমর্থক রিপন মোল্লা। যা  সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। পোল্ট্রি খামারী রিপন মোল্লা ওরফে প্রভাষক  মিজানুর রহমান আমাকে রাজনৈনিক ভাবে হেয় করার জন্য এই অপপ্রচার চালাচ্ছে”।

তিনি বলেন, গত ৩ মার্চ রিপন মোল্লার পোল্ট্রি খামারে খাদ্য চুরি হয়। তিনি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে সেটা নাকি দেখতে পান। চোর তারই খামারের কর্মচারী নুরুজ্জামান, একটি মুরগীর খাদ্যের বস্তা চুরি করে ফিড ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের কাছে তা বিক্রি করেছেন। এই চুরির ঘটনা বিচারের জন্য অষ্টমনিষা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও গ্রাম প্রধান আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাকের নিকট সালিশ প্রার্থনা করে তিনি রোজের টাকা দেন। তবে রোজের টাকা দেওয়ার পূর্বে তাকে আমি থানায় জিডি করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি আমার কথা না শুনে বিএনপি মনা একটি মহলের সহযোগিতায় নুরুজ্জামান ও জাকিরকে ধরে মারধরের সিদ্ধান্ত নেন।

অবশেষে ২৩ মার্চ ঝবঝবিয়া ঈদগাহ্ মাঠে গ্রামের প্রধান আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক ও আজিজল হকসহ গ্রামের অন্যান্য প্রধানগণ সালিশ করেন। সালিশে বিবাদী নুরুজ্জামানকে ৩ লক্ষ ১০ হাজার ও জাকির হোসেনকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দেওয়া হয়। তিনি আরো বলেন, সালিশ বৈঠকে উপস্থিত নুরুজ্জামান ১ লক্ষ টাকা ও জাকির হোসেন ৪০ হাজার টাকা তাৎক্ষনিক ভাবে সালিশ বোর্ডের সভাপতি ইয়াছিন আলী সরকারের কাছে জমা দেন । তিনি আবার ঐ টাকা গ্রামের মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আলহাজ্ব আব্দুল বারীর কাছে জমা রাখেন।

তারপরও মিজান মোল্লা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে যে,আমি ক্ষতিপূরনের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে  খামারী মিজানুর রহমান ওরফে রিপন মোল্লাকে দিচ্ছি না। আব্দুল ওয়াহেদ আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সালিশী বৈঠকের সদস্যদের উপস্থিতিতে ঝবঝবিয়া গ্রামের মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আলহাজ্ব আব্দুল বারীর কাছে জমারাখা জরিমানার ঐ টাকা খামারী মিজানুর রহমান কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ এর বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ভাবে খোঁজ খবর এবং গ্রামের বিভিন্ন লোকদের সাথে কথা বলে জেনেছি সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা ঝবঝবিয়া গ্রামের মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আলহাজ্ব আব্দুল বারীর কাছে জমা ছিল। পরে ঐ টাকা মিজান মোল্লাকে দেওয়া হয়েছে। একই কথা বলেন গ্রাম প্রধান ও সালিশের কমিটির সভাপতি ইয়াসিন আলী সরকার।

আব্দুল ওয়াহেদ অভিযোগ করেন যে ‘ সম্পূর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল ও আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিজান মোল্লা পরিকল্পিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে সালিশের টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত হন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে সিসি ক্যামেরায় চুরির ঘটনাটি যথাযথ ভাবে অনুসন্ধ্যান করে খামার থেকে প্রকৃত পক্ষে কত বস্তা ফিড চুরি হয় তা নিরুপণের জন্য আইন-শৃংখলা কতৃৃপক্ষের নিকট তিনি দাবি জানান।