শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৮ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ভাঙ্গুড়ায় পুলিশের মানবিক সহায়তায় নিখোঁজ নাতিদের খুঁজে পেলেন রিক্সা চালক

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি : পুলিশের মানবিক সহায়তায় নিখোঁজ হওয়া দুই এতিম শিশুদের অবশেষে খুঁজে পেলেন তাদের দাদা রিক্সা চালক আব্দুর রহিম। ঘটনাটি মঙ্গলবার পাবনার ভাঙ্গুড়া থানায় ঘটে।

জানাগেছে,শিশু দু’টির একজনের নাম জামিল(৮),অপরজনের নাম মুস্তাকিম(৬)। এরা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। দু’জন শিশুরই বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হবার পর তারা আলাদা সংসার করেন। জামিলের বাবার নাম জাহিদুল ইসলাম,মায়ের নাম চম্পা খাতুন এবং মুস্তাকিমের বাবার নাম চান মিয়া,মায়ের নাম নাজমা খাতুন। তারা উভয়েই জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি থানার বিলবাড়িয়া গ্রামে থাকেন।

আর জামিল ও মুস্তাকিম ঢাকার উত্তরা দক্ষিণখান এলাকার আমতলায় তাদের দাদার কাছে থাকে। ওদের দাদা আব্দুর রহিম রিক্সা চালিয়ে নাতিদের ভরনপোষণ করেন।

দাদা দরিদ্র রিক্সা চালক,তিনি ঈদের পোষাক কিনে দিতে পারবেন না ভেবে তারা কাউকে কিছু না বলে বাবার কাছে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়। জামিল ও মুস্তাকিম সোমবার বিকালে ঢাকা বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু ভুল করে জামালপুরের ট্রেনে না উঠে তারা উত্তরাঞ্চলগামী ট্রেনে উঠে বসে। হঠাৎ রাতে পাবনার ভাঙ্গুড়া থানার বড়ালব্রিজ রেল স্টেশনে ওরা নেমে পড়ে।

ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রাশিদুল ইসলাম জানান,গভীর রাতে অসহায় ও ক্ষুদার্থ অবস্থায় শিশু দু’টিকে ভাঙ্গুড়া বাসস্ট্যান্ডের শেডের নিচে কাঁদতে দেখেন থানার ইমারজেন্সি অফিসার এসআই মুরাদ হোসেন। তিনি তাদের সাথে মানবিক আচরণের মাধ্যমে সব ঘটনা শুনে থানায় নিয়ে যান।

অতপর শিশুদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণখান থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করা হয়। এদিকে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সেবা যতেœ খাওয়া-দাওয়া সেরে শিশুরা ফ্রেস ঘুম দিয়ে ক্লান্তি ও সংশয় অনেকটা দূর করে। মঙ্গলবার দুপুরে আব্দুর রহিম ভাঙ্গুড়া থানায় হাজির হয়ে নাতিদের পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। এর আগে ওসি মো: রাশিদুল ইসলাম শিশুদের ঈদের নতুন জামাকাপড় কিনে দেন।


রিক্সা চালক দাদা আব্দুর রহিম জানান, বাবা-মায়ের নতুন সংসারে এই শিশু দ’ুটির জায়গা হয়নি তাই তিনি ওদের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি অশ্রæসজল চোখে আরো বলেন,সাধ্যমত সকল চাহিদা পুরণ করি কিন্তু বাবা-মায়ের চাহিদা কিভাবে মেটাবো! আব্দুর রহিম পুলিশের মানবিকতায় মুগ্ধ হয়ে তাদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানান।

পরে আনন্দ ও কিছুটা নতুন শঙ্কায় চোখ মুছতে মুছতে বাচ্চাদের নিয়ে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ।