প্রতিবেদক/
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় আগামীকাল বুধবার ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল। ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণার জন্য ২৮ নভেম্বর দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ২৮ নভেম্বর রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ৮ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়। এদিকে এ মামলার রায়ে ন্যায় বিচার পাওয়া বিষয়ে আশাবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষ।
এ বিষয়ে মামলার রাষ্ট্রপক্ষে চীফ প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, ‘মামলায় আমরা ৪৬ জনের সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছি। ৮ জন আসামীর দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রয়েছে। নিহতের সহপাঠী ছাত্ররা সাক্ষ্য দিয়েছেন। ভিডিও ফুটেজ উপস্থাপন হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে আমরা দেখেছি আবরার হত্যার সঙ্গে চার্জশিট ভুক্ত ২৫ আসামিই কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই আমরা প্রত্যাশা করছি ন্যায় বিচার পাব।’
অন্যদিকে আসামি ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন ও মুনতাসির আল জেমির পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো বলেন, ‘আশা করছি, আবরারের মৃত্যুর পর আসামিদের বিরুদ্ধে যে ক্যামেরা ট্রায়াল হয়ে গেছে তা বিজ্ঞ আদালত মাথায় নিবেন না। ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপর রায় দেবেন। যদি তাই হয়, তবে আমরা আশা করতে পারি যে, তদন্তের ওপর বিচার হয়েছে, তাতে সব আসামিই খালাস পাবে।’
মামলার আসামিরা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান ও এএসএম নাজমুস সাদাত, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, শিক্ষার্থী আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শিক্ষার্থী শাসছুল আরেফিন রাফাত, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষে ছাত্র আকাশ হোসেন, শিক্ষার্থী মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, হোসেন মোহাম্মাদ তোহা, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু, বুয়েটের ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক্স বভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান (২২), সিভিল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (২০) ও কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মুজতবা রাফিদ (২১)। যাদের মধ্যে প্রথম ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। শেষের ৩ জন পলাতক। আর প্রথম ২২ জন কারাগারে রয়েছেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান।