পাবনায় দীর্ঘ ১২ বছর পর স্কুলশিক্ষার্থী ফারুক হোসেন (১৯) হত্যা মামলায় ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকালে পাবনার স্পেশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আহসান তারেক এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ভাঙ্গুড়া পৌরসভার চৌবাড়িয়া এলাকার সুধির চৌকিদারের ছেলে প্রভাস চন্দ্র দাস (১৮), শাহজাহান আলীর ছেলে শাহিন হোসেন (২১), ইব্রাহিম আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (২১), চৌবাড়িয়া গ্রামের রুন্নত আলীর ছেলে দুলাল হোসেন (২০), চরভাঙ্গুড়ার ইসহাক আলীর ছেল ইউসুফ আলী (২২), চৌবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল করিম (৪৫), মৃত হুমায়ুন কবিরের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২০), শরৎনগরের শ্রী মন্তোষের ছেল প্রিন্স (২০), চরভাঙ্গুড়ার হাফিজুর ওরফে হাফেজের ছেলে ফরিদ আহমেদ (২২) ও বিলকিস বেগম (৪০)।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আসামি আব্দুল করিম (৪৫) এবং বিলকিস বেগম (৪০) আদালতে রায় প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, স্কুলছাত্র ফারুক হোসেনকে ২০০৯ সালের ২৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেড়ানোর কথা বলে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যার পর একটি পুকুরে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা। এক সপ্তাহ পর ভাঙ্গুড়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ওসমান আলীর পুকুরে ছেলেরা গোসল করতে নামলে কচুরিপানার মধ্যে একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ওই পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহত ফারুখের মা আনোয়ারা খাতুন ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের সবাইকে গ্রেফতার করে। পুলিশ তদন্তের পর ১০ জনের নামে চার্জশিট প্রদান করে। এদের মধ্যে ২ আসামিকে গ্রেফতার করা গেলেও অন্যরা এখনো পলাতক।
দীর্ঘ ১২ বছর পর এ মামলার রায়ে আদালত হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ও পরিকল্পনাকারী ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এবং অন্যদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন দেওয়ান মজনুল হক এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন একেএম শামসুল হুদা ও এসএম ফরিদ উদ্দিন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখান থেকে নিরপরাধ হিসেবে খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।