বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সর্বজনীন পেনশন স্কিম- ভাঙ্গুড়ায় ৪ মাসে একাউন্ট ওপেন হয়েছে মাত্র ১৪২ ভাঙ্গুড়ায় প্রাণি সম্পদ বিভাগের জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাপনী ঘটলো সেবা সপ্তাহের ভাঙ্গুড়ায় ৭ দিন ব্যাপি বই মেলা জমে উঠেছে উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা : ওবায়দুল কাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন ১৮ এপ্রিল। হোসেন আলী ভারতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ান আজ ভাঙ্গুড়ায় দুগ্ধজাত ক্ষুদ্র শিল্পের সফল উদ্যোক্তা কলেজ ছাত্র অপু ঘোষ ভাঙ্গুড়ায় নতুন ইউএনও’র যোগদান- জ্ঞানের নিষ্প্রভ বাতিঘর কি আবার আলোকিত হবে ? বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাঙ্গুড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন গরুর হাট ! মাসে কেনাবেচা ৬ কোটি টাকা

ভাঙ্গুড়ায় বেতুয়ান কবরস্থানের ৭ লাখ টাকা আত্মসাত! তদন্তে পিবিআই

ভাঙ্গুড়া(পাবনা)প্রতিনিধি :
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১
  • ১৩৫৯ সময় দর্শন

কবরস্থানের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে গ্রামবাসী আদালতে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা রুজু করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বেতুয়ান গ্রামে।

বেতুয়ান গোরস্থানের বর্তমান কমিটির সেক্রেটারী আবুল হাশেম অভিযোগ করে বলেন, পুর্বের কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন খান সাবেক সেক্রেটারী আব্দুল কাদেরের মৃত্যুর পর তার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে ২ লাখ ৮ হাজার ৫শ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।

গ্রামবাসী জানায়, গত ২০২০ সালের ৪ডিসেম্বর সাবেক সেক্রেটারী আব্দুল কাদের মারা যান। এ সুযোগে মোসলেম উদ্দিন খান ৬ ডিসেম্বর গোরস্থানের যৌথ ব্যাংক হিসাবের চেক বইয়ের (১২ ৬২ ৭৪৪) নম্বর পাতায় সভাপতি হিসাবে নিজে স্বাক্ষর করেন এবং সেক্রেটারীর স্থলে মৃত আব্দুল কাদেরের স্বাক্ষর জাল করে ওই টাকা তুলে নেন। এর আগেও মোসলেম উদ্দিন গোরস্থান ফান্ডের পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
বর্তমান কমিটি গত মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। গ্রামবাসীর পক্ষে নয়া কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন ও সেক্রেটারী আবুল হাশেম ওই টাকা ফেরত প্রদানের জন্য বারবার তাগিদ দিলেও মোসলেম উদ্দিন তা দেননি। ফলে আবুল হাশেম বাদি হয়ে পাবনার আমলী ৪ নং আদালতে মোসলেম খানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নম্বর ৪৭/২০২১,তারিখ : ১৯/০৭/২১)। বিজ্ঞ আদালত পাবনা পিবিআই (পুলিশব্যুরো অবইনভেস্টিগেশন) কে তদন্ত করে ২৯/০৯/২০২১ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

গোরস্থানের নয়া কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারী আরো বলেন, মোসলেম খান নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে জাল কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে অনেকদিন সরকারি অনুদান তুলেছেন। পরবর্তীতে অমুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ হওয়ায় গেজেট থেকে তার নাম বাদ পরে এবং তার ভাতাও বন্ধ হয়ে যায়। তারা বলেন, জালিয়াতি করা তার স্বভাবে পরিনত হয়েছে।

এ ব্যাপারে মোসলেম উদ্দিন খানের বক্তব্য জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে উথ্থাপিত অভিযোগটি ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন,“আবদুল কাদেরজীবিত থাকতেই তিনি চেকে স্বাক্ষর করেছিলেন আর টাকা তুলেছেন গোরস্থান কমিটির ক্যাশিয়ার রেজাউল। তাই রেজাউল বলতে পারবে টাকা গুলো কোথায় ? ওই টাকা তোলার সাথে তিনি নিজে কোনো ভাবেই জড়িত নন’’। তার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন,‘‘স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে গ্রুপিং এর কারণে আমার মত অনেকেরই ভাতা সাময়িক বন্ধ হয়েছে কিন্তু পরে আবার আমার ভাতা চালু হয়েছে।  তাই বলে আমি অমুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাইনি’’। এছাড়া বর্তমানে আমার ভাতা আমি নিয়মিত ভাবেই পাচ্ছি বলেও তিনি দাবি করেন।

আব্দুল কাদেরের জানাযা নামাজ এবং দাফনে উপস্থিত থাকার পরও তার মৃত্যুর খবর ব্যাংককে না জানিয়ে উল্টো চেক কেন ইস্যু করলেন – এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর মোসলেম খান দিতে পারেননি।

আব্দুল কাদেরের ছেলে কাওছার আহমেদ লেবু বলেন,‘‘মোসলেম খান সম্পুর্ণ মিথ্যা বলেছেন কারণ তার বাবা মৃত্যুর পুর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অনেক দিন খুবই অসুস্থ ছিলেন। আমি নিশ্চিত তিনি গোরস্থানের চেক বইতে কোনো স্বাক্ষর করেননি’’। তিনি আরো বলেন,‘‘মোসলেম খান এর পুর্বেও বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে গোরস্থানের টাকা আত্মসাত করেন। এ জন্য বাবা তার উপর খুবই রাগান্বিত ছিলেন।

অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশশাখার একজন কর্মকর্তা জানান, বেতুয়ান গোরস্থানের নামে যে ব্যাংক হিসাব রয়েছে তার অপারেটর হিসাবে রয়েছেন সভাপতি মোসলেম উদ্দিন খান এবং সেক্রেটারী আব্দুল কাদের। ব্যাংকের স্টেটমেন্ট অনুসন্ধান করে দেখা যায় তাদের দ’ুজনের স্বাক্ষরেই টাকা উত্তোলিত হয়েছে। গত ০৬/১২/২০২০ তারিখে ২,০৮,৫০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। এর আগে গত ০২/১১/২০২০ তারিখে চেক বইয়ের (১২ ৬২ ৭৪৩) নম্বর পাতা ব্যবহার করে আরো ১লাখ ৮০ হাজার টাকা তোলা হয়। অবশ্য এই দুটো চেকেরই বাহক হিসাবে ক্যাশ বুঝে নেন বেতুয়ান দক্ষিণপাড়া গ্রামের রেজাউল।

রেজাউল বলেন, “মোসলেম খান আমাকে স্বাক্ষর যুক্ত চেক দিয়ে টাকা তুলে তাকে দিতে বলেছিলেন। আমি বাহক হিসাবে অগ্রণী ব্যাংকের বড়াল ব্রিজ শাখা হতে দু’বারই টাকা উত্তোলন করেছি । এর মধ্যে গোরস্থানের কাছে কিছু টাকা খরচ হয়। অবশিষ্ট টাকা সভাপতির  হাতে বুঝে দিয়েছিলাম”।
গোরস্থানের ক্যাশিয়ার হিসাবে সেক্রেটারীর মৃত্যুর খবর গোপন রেখে এবং তার জাল স্বাক্ষর যুক্ত চেক নিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুললেন কেন –এমন প্রশ্নের সদুত্তর তিনিও দেননি।

বেতুয়ান গ্রামের যুবলীগ নেতা রিপন সরকার ও সজীব খান বলেন, মোসলেম উদ্দিন সব কিছু জেনে শুনেই প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাত করেন। তারা আরো বলেন, গ্রামের শতকরা নব্বইভাগ লোক এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আদালতের দারস্থ হয়েছেন।

এছাড়া মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে মোসলেম উদ্দিন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আত্মসাত ও গ্রামবাসীর সাথে যে প্রতারণা করেছেন আদালতে তা প্রমাণ হবেই এবং এই মামলায় তার শাস্তিও হবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন - রায়তা-হোস্ট সহযোগিতায় : SmartiTHost
smartit-ddnnewsbd